পহেলাগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই গোলাবর্ষণ শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে। পহেলগাঁওয়ের প্রত্যাঘাত হিসাবে জঙ্গিদমনে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায়। আঘাত, প্রত্যাঘাতে দুই দেশেরই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যাও কম নয়! আপাতত দুই দেশই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের অশান্তিতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই হিসাব এ বার সরকারি ভাবে জানাল পাকিস্তান। তাঁদের দাবি, ভারতের আক্রমণে ১১ জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, ৪০ জন সাধারণ মানুষও প্রাণ হারিছেন। তাঁদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। তবে জঙ্গিমৃত্যুর কথা এখনও স্বীকার করেনি পাকিস্তান!
পাকিস্তানের সংবাধমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের প্রত্যাঘাতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে পাকিস্তান সরকারের জনসংযোগ দফতর (ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন)। তাদের দাবি, ১১ জন সৈনিক নিহত হন। ৭৮ জন গুরুতর জখম। ৪০ জন সাধারণ মানুষও প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি পাকিস্তানের। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনই শিশু, সাত জন মহিলা! আহতের সংখ্যা ১২১ জন।
ভারতের প্রত্যাঘাতে পাক সেনার স্থল এবং বিমানবাহিনীর কোন কোন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে, সেই তালিকাও দিয়েছে ইসলামাবাদ। সেই তালিকায় রয়েছেন পাক সেনাবাহিনীর নায়েক আব্দুল রহমান এবং ওয়াকর খালিদ, ল্যন্সনায়েক দিলওয়ার খান এবং ইকরামুল্লা, সিপাই মুহাম্মদ আদিল ও নিসার। এ ছাড়াও পাক বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ-সহ কয়েক জন টেকনিশিয়ানের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন ঔরঙ্গজ়েব, নাজিব, ফারুক এবং মুবাশির।
আরও পড়ুন:
পাকিস্তান যে নিহতদের তালিকা দিয়েছে, তাতে কোনও জঙ্গির উল্লেখ নেই। তবে ভারত প্রথম থেকেই বলে আসছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধুমাত্র জঙ্গিদমনের অভিযান। সাধারণ মানুষ বা পাক সেনাবাহিনীর উপর হামলা করার কোনও উদ্দেশ্য নেই। গত ৭ এপ্রিল রাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারত দাবি করে, তারা ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে। অনেক জঙ্গির মৃত্যু হয়। জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ এবং লশকর-এ-ত্যায়বার সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিরা নিহত হয় ভারতের অভিযানে।
অন্য দিকে, রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে ভারতীয় সেনা জানায়, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করাই ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর লক্ষ্য। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী হামলা চালানোর পরেই পাক সেনাঘাঁটিতে প্রত্যাঘাত করা হয়েছে। এই সংঘাতের আবহে ৩৫-৪০ পাক সৈনিক নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারত ৩৫-৪০ জনের কথা বললেও পাকিস্তান দাবি করল ১১ জন পাক সেনা কর্মী-আধিকারিকের প্রাণ গিয়েছে।