আগেই উধাও হয়েছে ‘অচ্ছে দিন’। এ বারে নরেন্দ্র মোদীর অভিধান থেকে ‘সুশাসন’ শব্দটিও বোধহয় উধাও হতে চলল!
রাত পোহালেই অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। তাঁর প্রয়াণের পরে প্রথম বার। রাজঘাটের কাছে যেখানে বাজপেয়ীর শেষকৃত্য হয়েছিল, সেখানে ন’টি পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে সমাধিস্থল। ন’টি পাথর কারণ, ন’য়ে নবগ্রহ, নবরত্ন। সেই সব পাথরে বাজপেয়ীর কবিতাও খোদাই করা থাকবে। আগামিকাল সেখানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার আগে আজ বাজপেয়ীর নামে একশো টাকার একটি স্মারক মুদ্রার উদ্বোধন করেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে মোদী সরকার প্রতি বছর বাজপেয়ীর জন্মদিনে যে ‘সুশাসন দিবস’ পালন করত, এ বারে তা কী হবে, তা অনিশ্চিত। আগে এই দিনটি পালনের জন্য রাজ্যে রাজ্যে পাঠানো হত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের। এ বারে তেমন কোনও নাড়াচাড়া এখনও দেখা যাচ্ছে না বিজেপি শিবিরে।
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য আগামিকাল অসমে যাচ্ছেন একটি সেতু উদ্বোধন করতে। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত দলের নেতা-মন্ত্রীদের রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে ‘সুশাসন দিবস’ পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কংগ্রেস নেতারা মুখিয়ে আছেন, বিজেপি আগামিকাল কী ভাবে পালন করে সেটা দেখার জন্য। যদি আগের মতো ‘সুশাসন দিবস’ পালন না হয়, তা হলে তারাও পাল্টা প্রচারে নামবে।
আজ অটলের নামে মুদ্রা উদ্বোধনে গিয়েও ঘুরিয়ে রাহুল গাঁধীকে বিঁধেছেন মোদী। কথায় কথায় তিনি বলেন, ‘‘আজ ২-৫ বছর ক্ষমতায় না থাকলেই অনেকে অস্থির হয়ে পড়েন। কিন্তু অটলবিহারী বাজপেয়ী অনেক বছর নিজের আদর্শে অটল থেকে বিরোধী শিবিরে থেকে গিয়েছেন।’’ কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘অটল-স্মরণেও এ ধরনের কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী! যদি প্রয়াত বাজপেয়ীর একটি গুণও পেতেন, তা হলে এ কথা বলতেন না। বাজপেয়ী সহিষ্ণু ছিলেন, বিরোধীদের কথায় কথায় খাটো করতেন না। সকলকে নিয়ে চলতে পারতেন। আমাদের অধুনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন কোনও গুণই নেই! তিনি ‘নতুন ভারত’ তৈরি করতে পারেননি, ‘নতুন বিজেপি’ তৈরি করে ফেলেছেন।’’
আজকের অনুষ্ঠানে দর্শক আসনে বাজপেয়ীর পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। মঞ্চে রাখা হয়েছিল বাজপেয়ীর সতীর্থ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। কিন্তু সভা শেষে আডবাণীকে অনেকটা দূর থেকেই কুশল বিনিময় করেন মোদী। প্রবীণদের প্রতি মোদীর এই ‘আচরণ’ও নজর এড়ায়নি বিরোধীদের। কংগ্রেসের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘পাঁচ রাজ্যে হেরে বাজপেয়ীকে যথার্থ সম্মান জানিয়েছেন মোদী। বিজেপি না পারলেও কংগ্রেস এখন তিন রাজ্যে ‘সুশাসন’ পালন করছে।’’