দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় কি বিদেশি যোগও রয়েছে? তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এই প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছে। দিল্লিতে বিস্ফোরণের ঠিক আগেই হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। ওই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এ বার জানা গেল, কী ভাবে বোমা তৈরি করতে হয়, বিদেশ থেকে সে বিষয়ের উপর ভিডিয়ো পাঠানো হয়েছিল ফরিদাবাদকাণ্ডে ধৃত এক চিকিৎসককে।
তদন্তকারী আধিকারিক সূত্রে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানাচ্ছে, এমন প্রায় ৪২টি ভিডিয়ো পাঠানো হয়েছিল। ‘ফরিদাবাদ মডিউল’-এর সঙ্গে অন্তত তিন জন বিদেশি ‘হ্যান্ডলার’ যুক্ত ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কী ভাবে বোমা বানাতে হয়, তা ধৃত চিকিৎসকদের শেখাতেন ওই বিদেশি হ্যান্ডলারেরা। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে এই সন্দেহভাজন বিদেশিদের কিছু নাম হাতে পেয়েছেন— ‘হানজ়ুল্লা’, ‘নিসার’ এবং ‘উকাসা’। তবে এগুলি ওই বিদেশিদের আসল নাম নয় বলেই দাবি ওই সূত্রের।
ওই তিন জনের মধ্যে অন্তত এক জনের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল ফরিদাবাদাকাণ্ডে ধৃত চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদের। ‘হানজ়ুল্লা’ ছদ্মনামধারী ওই বিদেশি মুজ়াম্মিলকে বোমা বানানো সংক্রান্ত অন্তত ৪২টি ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন। দিল্লির বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া গাড়ির চালক চিকিৎসক উমর নবির সঙ্গেও পরিচয় ছিল মুজ়াম্মিলের। ফরিদাবাদে একই মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। ফলে দিল্লিতে বিস্ফোরণের সঙ্গেও বিদেশি যোগ ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারী সূত্রে খবর, ফরিদাবাদকাণ্ডের সঙ্গে বিদেশি হ্যান্ডলারদের যোগাযোগের যে তথ্য উঠে আসছে, তার সঙ্গে অতীতের বেশ কিছু ঘটনার মিল পাওয়া যাচ্ছে। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানাচ্ছে, ২০২০ সাল থেকে কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে বেশ কিছু ঘটনাতেও এমন ছদ্মনামধারী বিদেশি হ্যান্ডলারের যোগ পাওয়া গিয়েছিল। উঠে এসেছিল ‘কর্নেল’, ‘ল্যাপটপ ভাই’ এবং ‘ভাই’য়ের নাম। ওই সব ছদ্মনামগুলিই মহম্মদ শাহিদ ফয়জ়ল নামে এক বিদেশি হ্যান্ডলারের বলে মনে করেন তদন্তকারীরা। ২০২২ সালে কোয়েম্বত্তুরে আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণ, ম্যাঙ্গালুরুতে অটোয় বিস্ফোরণ এবং ২০২৪ সালে বেঙ্গালুরুতে রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের সঙ্গে এই ফয়জ়লের যোগ ছিল বলে সন্দেহ করা হয়।