Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Congress

Congress: দলের নীতি ঠিক করতে বিজেপি-র ধাঁচে সংসদীয় বোর্ড চান সনিয়া, সমস্যা মিটবে কি?

কংগ্রেসে লাগাতার গোলমাল বন্ধ করতে যে সূত্রগুলি সামনে এসেছে, তা হল, সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বকে মেনে নিয়ে আপাতত বিজেপির ধাঁচে দলের নীতি নির্ধারণের জন্য একটি সংসদীয় বোর্ডের গঠন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২২ ০৮:০২
Share: Save:

নতুন সূত্রে গোলমাল থামানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে কংগ্রেসে। হোলির সন্ধ্যায় সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা গুলাম নবি আজাদের বৈঠকে নতুন কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কংগ্রেসে লাগাতার গোলমাল বন্ধ করতে যে সূত্রগুলি সামনে এসেছে, তা হল, সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বকে মেনে নিয়ে আপাতত বিজেপির ধাঁচে দলের নীতি নির্ধারণের জন্য একটি সংসদীয় বোর্ডের গঠন। এর আগেই সনিয়া দল চালানোর জন্য একটি কমিটি গড়েছিলেন। কিন্তু সেখানে রাহুল গান্ধী শিবিরের নেতাদের প্রাধান্য ছিল। এই কমিটিকেই নতুন ভাবে সাজিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাদের জায়গা করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কংগ্রেসে। অর্থাৎ, জি-২৩ গোষ্ঠীর বিক্ষুব্ধ নেতারা দল ছেড়ে না গিয়ে ভবিষ্যতে দলের নীতি ও রণকৌশল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, গুলাম নবি কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন এগিয়ে নিয়ে আসা বা ওই ধরনের কোনও দাবি তোলেননি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাহুল কংগ্রেসের দায়িত্ব নিতে চাইবেন না বলেই মনে করছেন দুই শিবিরের নেতারাই। সে ক্ষেত্রে গান্ধী পরিবারের বাইরের কোনও নেতাকে কংগ্রেসের সভাপতি করার ভাবনা সামনে এসেছে।
তবে দলের ওই শীর্ষ নেতা বাছার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত সামনে আসছে। এক, ওই নেতাকে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হতে হবে। দুই, বিক্ষুব্ধ শিবিরের কাছেও গ্রহণযোগ্য হতে হবে তাঁকে। তিন, দল পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তাঁর। এই ফর্মূলায় রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের নাম কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে আলোচনায় উঠে এসেছে। গহলৌত গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত। রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতি থাকার সময়ে তিনি সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর আমলেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। ফলে এখন রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবির মধ্যে নতুন পদে গহলৌতকে মেনে নেবেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। সে ক্ষেত্রে সমস্যা একটাই— গহলৌত নিজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চাইবেন কি না। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, গান্ধী পরিবারের বাইরের কোনও নেতা সভাপতির দায়িত্ব নিলে রাহুল গান্ধী লোকসভার নেতা হবেন।

গত কাল সনিয়ার সঙ্গে গুলাম নবির বৈঠক যে ইতিবাচক মোড় নিয়েছে, সনিয়া শিবির থেকে সেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ বলেছেন, ‘‘আমরা সব সময়েই চাই, সবাই এগিয়ে এসে দলকে শক্তিশালী করুন। আমাদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। শুধু গান্ধী পরিবারের প্রসঙ্গ তোলা কোনও কাজের কথা নয়। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অনেকেই এ কথা বলেছেন।’’ এর পরেই খড়্গে বলেন, ‘‘গুলাম নবি আজাদ বহু বছর ধরে দলে রয়েছেন। সব কিছুই জানেন... তিনি অন্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন গুলাম নবি। উনি চাইছেন, দল ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এটা খুবই ভাল ইঙ্গিত। উনি জানিয়েছেন, দলকে শক্তিশালী করতে চান। আমরা তাঁর এই অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, গান্ধী পরিবারের নির্দেশেই এমন বিবৃতি খড়্গের।

এ দিকে, কয়েক বছর আগে বিজেপি ছেড়ে এসেও কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেননি যিনি, গুজরাতের সেই নেতা শঙ্করসিন বাঘেলাকে এখন জি-২৩-এর বৈঠকে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে। তিনি আজ যুক্তি দিয়েছেন, সনিয়ার এক সময়ের রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল যদি বেঁচে থাকতেন, তা হলে দলের এমন পরিস্থিতি হতো না। কারণ, কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে দলের নেতাদের সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। পটেল তা পূরণ করতে পারতেন বলেই মনে করেন বাঘেলা। তাঁর মতে, কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতারা দল ছাড়তে চাইছেন না। শুধু চাইছেন, তাঁদের কথা শোনা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress G-23 group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE