Advertisement
০২ মে ২০২৪
Congress

কংগ্রেসের অন্নভাগ্যে জল ঢালতে ঋণ মকুবের অঙ্ক

প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ঠিক না ভুল, তা নিয়ে বেঙ্গালুরুর প্রাণকেন্দ্রে তর্ক জমল। কিন্তু শহর ছেড়ে বেরিয়ে গ্রামে ঢুকতেই শুক্রবারের আলোচনায় মূল বিষয় হয়ে উঠল, কর্নাটকে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পার প্রতিশ্রুতি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০৩:১২
Share: Save:

এম চিন্নাস্বামী ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনেই অনিল কুম্বলে সার্কল। আশেপাশেই একগুচ্ছ স্টার্ট-আপ, কর্পোরেট সংস্থার অফিস। কাজের ফাঁকে কফির আড্ডায় ঘুরে-ফিরে আসছে নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর প্রান্তে জনসভায় মোদী অভিযোগ করে গিয়েছেন, কংগ্রেসের আমলে বেঙ্গালুরু গার্ডেন সিটি থেকে গারবেজ সিটি, সিলিকন ভ্যালি থেকে সিন ভ্যালি, কম্পিউটার ক্যাপিটাল থেকে ক্রাইম ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ঠিক না ভুল, তা নিয়ে বেঙ্গালুরুর প্রাণকেন্দ্রে তর্ক জমল। কিন্তু শহর ছেড়ে বেরিয়ে গ্রামে ঢুকতেই শুক্রবারের আলোচনায় মূল বিষয় হয়ে উঠল, কর্নাটকে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পার প্রতিশ্রুতি।

উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নীতির হুবহু নকল করে এ দিন কর্নাটকে বিজেপির ইস্তাহার প্রকাশ হল। ১২ মে ভোটে জেতার বাজি হিসেবে ইয়েদুরাপ্পা ঘোষণা করলেন, মুখ্যমন্ত্রী হলে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত সমস্ত কৃষি ঋণ মকুব করে দেবেন। ইস্তেহার প্রকাশের পরে প্রশ্ন উঠল, কর্নাটকের চাষিরা আবার কবে ঋণ মকুবের দাবি তুললেন? বিজেপি নেতারা মানলেন, এমন কোনও দাবি ওঠেনি। তা হলে?

এখানেই লুকিয়ে কর্নাটক ভোটের রহস্য। গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের রাজত্বে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ‘অন্নভাগ্য’ থেকে শুরু করে গরিবের জন্য একের পর এক প্রকল্প চালু করেছেন। আশীর্বাদ কুড়িয়েছেন। শহরে সিদ্দারামাইয়ার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা তৈরি হলেও, গ্রামে এখনও তাঁর প্রতি আস্থা অটুট। কারণ, খরা হলেও গ্রামের মানুষ সিদ্দারামাইয়ার সরকারি প্রকল্পের সুবাদে খেয়ে-পরে বেঁচেছে। ইয়েদুরাপ্পা সেই ‘অন্নভাগ্য’কে চ্যালেঞ্জ জানাতেই অন্নদাতাদের ঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করেছেন।

রাহুল গাঁধী জানেন, কর্নাটকে সিদ্দারামাইয়া গদি হারালে বিজেপি কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছেই যাবে। তাই আজ কর্নাটকের কালগিতে প্রচারে তাঁর ঘোষণা, ২০১৯-এ কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে শুধু কর্নাটক নয়, গোটা দেশের চাষিদেরই কৃষি ঋণ মকুব করে দেওয়া হবে। বিজেপির ইস্তাহারকে নরেন্দ্র মোদীর অনুপ্রেরণায় তৈরি ‘রদ্দিমার্কা রূপকথা’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। একইসঙ্গে বেঙ্গালুরুর বিতর্ক উসকে দিতে তাঁর অভিযোগ, গার্ডেন সিটিকে গারবেজ সিটি বলে মোদী এ শহরের মানুষকে অপমান করেছেন।

বিজেপি নেতারা মনে করাচ্ছেন, কর্নাটক মানে শুধু বেঙ্গালুরুর আলো ঝলমলে আইটি হাব নয়। রাজ্যের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষই এখন চাষের উপর নির্ভরশীল। এক সময় চাষিদের ‘মসিহা’ বলে পরিচিত ইয়েদুরাপ্পা এবার তাই ক্ষমতায় ফিরতে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে মরিয়া।

শহরের ভোট জয় তাঁর কাছে অপেক্ষাকৃত সহজ বলে মনে হলেও, গ্রামের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে তিনি ঋণ মকুবের টোপ দিয়েছেন। গরিব মহিলাদের জন্য স্মার্টফোন থেকে চাষিদের জন্য আরও একগুচ্ছ প্রকল্পের স্বপ্ন রয়েছে ইস্তাহারে। বাদ পড়েনি গো-রাজনীতিও। ইয়েদুরাপ্পার প্রতিশ্রুতি, তিনি ফের গো-হত্যা প্রতিরোধ বিল নিয়ে আসবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

B.S. Yedyurappa NATM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE