বদলাপুরকাণ্ডে অভিযুক্তের এনকাউন্টারে মৃত্যুর মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চাইছেন অভিযুক্তের বাবা-মা। বৃহস্পতিবার বম্বে হাই কোর্টে তাঁরা জানান, বিশেষ তদন্তকারী দলের বিরুদ্ধে মামলাটি তাঁরা আর টেনে নিয়ে যেতে চান না। হাই কোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিত দেরে এবং বিচারপতি নীলা গোখলে দম্পতিকে প্রশ্ন করেন, তাঁরা কোনও চাপের মুখে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না। জবাবে মৃতের বাবা-মা জানান, তাঁদের উপর কেউই কোনও ধরনের চাপ দেননি। কিন্তু মামলার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে করতে তাঁরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
যদিও মামলা খারিজ করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ দেয়নি হাই কোর্ট। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বে়ঞ্চ’ অনুসারে, দুই বিচারপতির বেঞ্চ মৌখিক ভাবে জানিয়েছে এ ভাবে বললেই মামলাটি বন্ধ করে দেওয়া য়ায় না। কারণ এই মামলায় অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। বস্তুত, মহারাষ্ট্রের ঠাণে জেলার বদলাপুরে নাবালিকা নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনরোষ তৈরি হয়েছিল। এরই মধ্যে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অভিযুক্তের। তাঁকে ভুয়ো এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। বম্বে হাই কোর্টে এ নিয়ে মামলাও করেন তাঁরা। মামলায় ইতিমধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে আদালতে। মামলাটির এই পর্যায়ে এসে সেটি প্রত্যাহার করে নিতে চাইছেন অভিযুক্তের বাবা-মা।
এনকাউন্টারের মামলায় এর আগে হাই কোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি ওই অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা পড়েছে আদালতে। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, আগ্নেয়াস্ত্রে অভিযুক্তের আঙুলের ছাপ পাওয়া যায়নি বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। রিপোর্টে ইঙ্গিত করা হয়েছে, উপস্থিত পুলিশকর্মীরা বলপ্রয়োগ না করেই পরিস্থিতি সহজে সামাল দিতে পারতেন। ভুয়ো এনকাউন্টারের তত্ত্বও উড়িয়ে দিচ্ছে না অনুসন্ধান রিপোর্ট।
আরও পড়ুন:
গত বছরের অগস্টে মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে এক নার্সারি স্কুলে দুই খুদে পড়ুয়াকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে স্কুলেরই সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে তোলপাড় হয় বদলাপুর। গঠিত হয় বিশেষ তদন্তকারী দল। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় অভিযুক্ত সাফাইকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পৃথক একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তকে তালোজা জেলে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। সেখান থেকে নিয়ে ফেরার সময় মাঝপথেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অভিযুক্তের। ঘটনার পর পুলিশ জানায়, তালোজা জেল থেকে ফেরার সময় এক কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেন অভিযুক্ত। কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলিও চালান তিনি। সেই সময় পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় অভিযুক্তের।