E-Paper

মিথ্যা থেকে বাঁচতে উড়ানে বোমা রাখার ভুয়ো খবর

কালবিলম্ব না করে দিল্লি পুলিশ আসে কলকাতায় এবং গত শনিবার কলকাতা থেকে নজরুলকে গ্রেফতার করে শহরের আদালতে তোলা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:১৮
arrest

—প্রতীকী ছবি।

মিথ্যাই ছিল তাঁর বেসাতি।

সেই মিথ্যাকে আশ্রয় করেই প্রেমের ফাঁদ পেতেছিলেন নজরুল ইসলাম। বাংলাদেশি নজরুলের সেই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন দিল্লির যুবতী। বিবাহের পরে সন্দেহ হওয়ায় নজরুল সম্পর্কে বিশদ জানতে তিনি দিল্লি থেকে কলকাতা পাঠাচ্ছিলেন ভাইকে। নজরুল তখন সদর কলকাতার এক মধ্যমানের হোটেলে বসে।

শ্যালকের আসার আগাম খবর পেয়ে যান নজরুল। পেয়ে যান উড়ান সংখ্যাও। হোটেলে বসেই নতুন আইডি তৈরি করে সেখান থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে ই-মেল করে জানান, সকালের সেই উড়ানে বোমা রাখা আছে।

সেটা ছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি। নড়েচড়ে বসে দিল্লি বিমানবন্দর। সমস্ত যাত্রী আটকে পড়েন। চিরুনি তল্লাশিতে মেলে না কিছুই। সন্দেহ ঘনীভূত হয় দেরিতে আসা এক মহিলা যাত্রীকে নিয়ে। তবে, তিনি যে নির্দোষ বুঝতে সময় লাগে না। বোমাতঙ্কের সেই ই-মেল, যে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে মেল করা হয়েছে, তার হদিস থেকে লালবাজারের সাহায্যে উঠে আসে মধ্য কলকাতার ওই হোটেলের নাম।

কালবিলম্ব না করে দিল্লি পুলিশ আসে কলকাতায় এবং গত শনিবার কলকাতা থেকে নজরুলকে গ্রেফতার করে শহরের আদালতে তোলা হয়। সেখান থেকে ট্রানজ়িট রিম্যান্ডে তাঁকে নিয়ে দিল্লি ফিরে যায় তারা।

গল্পের সূত্রপাত কোভিড-কালের আগেই। নজরুল পঞ্জাবে পড়তে গেলে ওই যুবতীর সঙ্গে আলাপ হয়। পড়া শেষে নজরুল বাংলাদেশ ফিরলেও যোগাযোগ থেকে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, ‘মার্কিন মুলুকে গবেষণার সুযোগ পেয়েছেন’ এই মিথ্যাকে সামনে রেখে যুবতীকে নজরুল বোঝাতে সক্ষম হন যে দু’জনে সেই মুলুকে চলে গেলে তাঁর খ্রিষ্টান ও নজরুলের মুসলিম পরিচয় নিয়ে সমস্যা হবে না।

এই বিশ্বাসে যুবতী বিয়ে করেন নজরুলকে। পুলিশ সূত্রের দাবি, এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রভূত টাকা ধার (অথবা নয়ছয়) করে কার্যত কলকাতা পালিয়ে চলে আসেন নজরুল। ওদিকে দিল্লি থেকে সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী বার বার জানতে চান কবে তাঁরা আমেরিকা যাবেন। আর দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের জন্য উড়ান পেতে সমস্যা হচ্ছে, এই মিথ্যাকে সামনে রেখে টালবাহানা করতে থাকেন নজরুল। যুবতীকে বলেনও যে তিনি কলকাতায় রয়েছেন। তখনই বিস্তারিত খোঁজ নিতে ভাইকে কলকাতা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মধ্য কলকাতার ওই হোটেলের মালিক মঙ্গলবার জানিয়েছেন, প্রায় এক মাস ধরে তাঁদের এখানে আবাসিক হিসেবে ছিলেন নজরুল। শনিবার লালবাজারের পুলিশ সঙ্গে নিয়ে দিল্লি পুলিশের দল হোটেলে আসে। তখন সেখানে প্রায় ৩০ জন আবাসিক ছিলেন। হোটেলের ওয়াই-ফাই খতিয়ে দেখে নজরুলকে শনাক্ত করে পুলিশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Delhi Airport bomb arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy