বাংলাদেশে একের পর এক জঙ্গিহানায় উদ্বিগ্ন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। এই ধরনের ঘটনা রোধে পরিকল্পিত ও কার্যকর প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানান তাঁরা। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোয়াজ্জেম আলির মাধ্যমে বরাক বঙ্গের পক্ষ থেকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের উদ্দেশে গত কাল এক ফ্যাক্সবার্তা পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে— ‘গোটা ঘটনাক্রম এক সুতোয় গাঁথা। তাই এ সবের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে হিংসাশ্রয়ী হামলা আর মানবহত্যা চলতেই থাকবে, যার প্রতিক্রিয়া সুদূরপ্রসারী হওয়ার আশঙ্কা।’
বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত বলেন, ‘‘ছক বেঁধে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, মুক্তমনা বুদ্ধিজীবী ও উদারবাদীদের উপর ক্রমাগত নৃশংস আচরণ এক নির্দিষ্ট পথ ধরে চলছে।’’ ঢাকার গুলশনে ভারতীয় কন্যা-সহ ২০ জনকে হত্যা এবং ইদের দিনে কিশোরগঞ্জে হামলা চালিয়ে ৫ জনকে খুন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই অভিমত তাঁর।
ধর্ম পালনের সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনও সম্পর্ক নেই, সে কথা উল্লেখ করে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কিন্তু জঙ্গিরা এখন ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী কাজকর্ম করছে। এরা সামাজিক মূল্যবোধ এবং দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যুবকদের ফুঁসলিয়ে তাদের মনে উগ্র ধর্মান্ধতা ও প্রতিহিংসার বিষবীজ বপণ করে নরসংহারে লেলিয়ে দেওয়ার পিছনে নিশ্চিত ভাবেই সুগভীর আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে। ধর্মীয় মোড়কে মধ্যপ্রাচ্যের হিংসার কালো মেঘ ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও হতে পারে।’’ তাই পর্দার আড়ালে থাকা কুশীলবদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান বরাক বঙ্গের সাধারণ সম্পাদক। তবে এই পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার, সে দেশের উদারমনা যুক্তিবাদী, বুদ্ধিজীবী, লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মী এবং আলেমরা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থেকেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন গৌতমবাবু। একে তিনি অন্ধকারের মধ্যে আলোকবর্তিকা বলেও অভিহিত করেন। পাশাপাশি বরাক বঙ্গের উদ্বেগের কথা শুনিয়ে বলেন, এই প্রতিবাদী কর্মততপরতা সত্ত্বেও পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বরাক বঙ্গের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ-সহ ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার গোপন অভিসন্ধিকে যদি অঙ্কুরে বিনাশ করা না হলে মানবিক ও রাজনৈতিক সমস্যার উদ্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy