Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বরাকের অমিতাভ স্মরণ

সাংবাদিক-সাহিত্যিক অমিতাভ চৌধুরীকে স্মরণ করল বরাক উপত্যকা। কলকাতায় সদ্য প্রয়াত বরাকের এই সুসন্তানের স্মরণসভার আয়োজন করেছিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। এই সাহিত্যিক-সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বরাকের বিশিষ্ঠ মানুষজন। ছিলেন বহু সাধারণ মানুষও। গত কালের এই স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বক্তা। বরাক উপত্যকার বড়থল চা বাগানে জন্ম অমিতাভ চৌধুরীর। বড় হন শ্রীগৌরী গ্রামে। পরবর্তী কালে শান্তিনিকেতনের স্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করে প্রবেশ সাংবাদিকতায়। কর্মজীবনের পুরো সময়টাই তাঁর কাটে কলকাতায়। কিন্তু বরাকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হয়নি। কারণ টানটা যে ছিল নাড়ির।

সংবর্ধনা সভায় অমিতাভ চৌধুরী (ডান দিক থেকে তৃতীয়)। —ফাইল চিত্র।

সংবর্ধনা সভায় অমিতাভ চৌধুরী (ডান দিক থেকে তৃতীয়)। —ফাইল চিত্র।

অমিত দাস
হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৪:৩০
Share: Save:

সাংবাদিক-সাহিত্যিক অমিতাভ চৌধুরীকে স্মরণ করল বরাক উপত্যকা। কলকাতায় সদ্য প্রয়াত বরাকের এই সুসন্তানের স্মরণসভার আয়োজন করেছিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন।

এই সাহিত্যিক-সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বরাকের বিশিষ্ঠ মানুষজন। ছিলেন বহু সাধারণ মানুষও। গত কালের এই স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বক্তা। বরাক উপত্যকার বড়থল চা বাগানে জন্ম অমিতাভ চৌধুরীর। বড় হন শ্রীগৌরী গ্রামে। পরবর্তী কালে শান্তিনিকেতনের স্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করে প্রবেশ সাংবাদিকতায়। কর্মজীবনের পুরো সময়টাই তাঁর কাটে কলকাতায়। কিন্তু বরাকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হয়নি। কারণ টানটা যে ছিল নাড়ির।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক যজ্ঞেশ্বর দেব বলেন, ‘‘অমিতাভ চৌধুরীর প্রয়াণে বরাক উপত্যকা তথা সমগ্র বাঙালি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’ বরাক বঙ্গের কর্মকর্তা সুকোমল পাল বলেন, ‘‘১৯৬১ সালে তখনকার কাছাড় জেলার বাংলা ভাষা-আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা নিয়েছিলেন অমিতাভ চৌধুরী। সে সময় ‘আনন্দবাজার’ -সহ বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে ভাষা-আন্দোলন সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মাতৃভাষার অধিকারের এই বার্তাকে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেছিলেন তিনি।’’ অধ্যাপক দেবদত্ত চক্রবর্তী বরাকের এই সুসন্তানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘‘অমিতাভবাবুর কাছে বরাকের মানুষ চির দিন ঋণী থাকবে। ভাষা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার জন্যই বরাকের মানুষ তাঁকে মনে রাখবেন।’’

আলোচনা সভার মুখ্য বক্তা তথা বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য অমিতাভবাবুকে সম্মান জানিয়ে তাঁর বর্ণময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘অমিতাভবাবু বরাকের ভাষা আন্দোলন এবং বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সময় সাংবাদিকতার পাশাপাশি, একজন দায়িত্বশীল বাঙালির ভূমিকা যথার্থ ভাবে পালন করেছিলেন।’’ নীতীশবাবুর কথায়, তিনি রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কিত মূল্যবান পুস্তক রচনা করা ছাড়াও বরাকের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিকায় ‘মুখের ভাষা বুকের রুধির’ নামক একখানি পুস্তক রচনা করেছিলেন। অমিতাভবাবু আদ্যোপান্ত একজন খাঁটি বাঙালি ছিলেন বলেও নীতীশবাবু উপস্থিত শ্রোতাদের জানান। তাঁর মতে, অমিতাভবাবুর প্রয়াণে শুধু বরাক উপত্যকাই নয়, সমগ্র বাঙালি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কখনওই পূরণ হবার নয় বলে নীতীশবাবু দুঃখ প্রকাশ করেন।

বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের হাইলাকান্দি জেলা সমিতির সভাপতি পরিতোষ চন্দ্র দত্তের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত এই স্মৃতিচারণ সভায় প্রয়াত সাংবাদিকের শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি-কর্মী সুদর্শন ভট্টাচার্য, সাংবাদিক শঙ্কর চৌধুরী, হাইলাকান্দি জেলা নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE