ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের মজুরি প্রদান শুরু হল বরাক উপত্যকাতেও। সমস্ত প্রক্রিয়া সেরে আজ নির্ধারিত দিনে প্রথম মজুরি দিল হাইলাকান্দি জেলার বর্নিব্রিজ টি এস্টেট এবং কাছাড়ের রোজকান্দি টি এস্টেট।
দুই বাগান কর্তৃপক্ষই সমস্ত শ্রমিক ও কর্মচারীর মজুরি-বেতন আজ আসাম গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায় প্রদান করে। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইডররা (সিএসপি) বাগানে গিয়ে সেই মজুরি হিসেব কষে শ্রমিক-কর্মচারীদের হাতে নগদে তুলে দেন। এর আগে অবশ্য সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারীর নামে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মজুরি বণ্টনের বিশেষ মুহূর্তটির সাক্ষ্মী হতে বর্নিব্রিজ টি এস্টেটের মোহনপুর ডিভিশনে উপস্থিত ছিলেন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার বরাক ভ্যালি শাখার সহকারী সচিব শরদিন্দু ভট্টাচার্য, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এস পি শর্মা চৌধুরী ও বাগান ম্যানেজার পি কে ঘোষ। একই সময়ে মূল ডিভিশনেও ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন-মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হয়।
শরদিন্দুবাবু জানিয়েছেন, বর্নিব্রিজ টি এস্টেটের দুই ডিভিশনে মোট ৫০৯ জন স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে স্থায়ী ৩৮১ জনের বেতন-মজুরি আজ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মিটিয়ে দেওয়া হয়। মোহনপুরের ৫৯ জন স্থায়ী শ্রমিকের সবাই সব টাকা তুলে নিলেও মোহনপুরে বেশ কিছু শ্রমিক আজ সাপ্তাহিক মজুরি তুলতে চায়নি। প্রয়োজনে তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে সংগ্রহ করবে। অস্থায়ী শ্রমিকদের মজুরিও একই পদ্ধতিতে দুই-একদিনের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট বাতিলের প্রেক্ষিতে চা বাগান শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে বিশেষ অ্যাকাউন্ট খুলে ওই অ্যাকাউন্টে মোট বেতন-মজুরি চেকে বা বড় নোটে প্রদান করেন বাগান মালিকরা। সেই হিসেবে মালিকদের হাতে ছোট নোট তুলে দেওয়া হয়। পরে সরকার প্রত্যেক শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করে ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেতন-মজুরি মেটাতে নির্দেশ জারি করে। এ নিয়ে নানা যুক্তি-তর্কের মধ্যেই বর্নিব্রিজ টি এস্টেট এই কাজে এগিয়ে যায়। এরই ফলস্বরূপ উপত্যকায় আজ তারাই সবার আগে নতুন পদ্ধতিতে মজুরি প্রদানে সক্ষম হল। তাদের পরে আজই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন-মজুরি প্রদান করে রোজকান্দি টি এস্টেট। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন-এর সচিব ভাস্কর চালিহা, গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার বি ইউ আহমদ ও বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক ডি এন বারুই।
শরদিন্দুবাবু জানিয়েছেন, টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার অধীনে বরাক উপত্যকায় মোট ৫২টি মূল বাগান ও ৮০টি ফাঁড়ি বাগান রয়েছে। সব ক’টিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মজুরি প্রদানের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ চলছে। তার আগে পর্যন্ত জেলাশাসকের বিশেষ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy