দিনে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। আর রাত হলেই অন্য রূপে দেখা যেত তাঁদের। দিল্লিতে গত কয়েক দিনে পর পর বেশ কয়েকটি দোকানে চুরির ঘটনায় শোরগোল পড়তেই তদন্ত শুরু হয়। আর তদন্ত শুরু হতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ছয় মহিলার একটি গ্যাং। যাঁদের গোটা এলাকাবাসী চিনতেন ভিক্ষুক হিসাবেই। ভিক্ষুকের বেশে তাঁরাই যে চুরি করতেন, তা জানার পর স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিক থেকে এলাকাবাসীরাও।
পুলিশ জানিয়েছে, দিনে মূলত দোকানগুলিতে ভিক্ষা করতে যেতেন ওই মহিলারা। আলাদা আলাদা ভাবে এক একটি এলাকায় ভিক্ষার পাশাপাশি দোকানগুলিতে রেকিও করতেন তাঁরা। তার পর রাত হতেই একটি একটি করে দোকানে চুরি করা শুরু করেন। নগদ, গয়না যা পেতেন সব কিছু লুট করে রাজস্থানে নিজেদের গ্রামে পালিয়ে যেতেন। বেশ কিছু দিন চুরির টাকা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতেন। তার পর টাকা ফুরিয়ে গেলেই আবার রাজস্থান থেকে দিল্লি ফিরে আসতেন। এ ভাবেই দিল্লি থেকে রাজস্থান, আবার রাজস্থান থেকে দিল্লি যাতাযাত করতেন তাঁরা।
গত ৮ ফেব্রিয়ারি চুরির একটি অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। দোকানের শাটার ভাঙা ছিল। টাকার বাক্স ফাঁকা। ওই বাক্সে ১০ লক্ষ টাকা ছিল। সব কিছু লুট করে নিয়ে গিয়েছিল চোরেরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামতেই পুলিশ জানতে পারে, পাশের আরও কয়েকটি এলাকার দোকানে চুরি হয়েছে। কোন কোন দোকানে চুরি হয়েছে সেগুলির একটি তালিকা তৈরি করে পুলিশ। তার পর ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে মহিলাদের চিহ্নিত করে পুলিশ। তার পর তাঁদের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখে প্রতিটি চুরির সময় ওই মহিলারা একটি টোটো করে আসতেন। প্রথমে সেই টোটোচালকের খোঁজ শুরু হয়। তাঁর হদিস পায় পুলিশ। জোরাবর নামে ওই টোটোচালককে গ্রেফতার করতেই মহিলা গ্যাংয়ের হদিস মেলে। সেই সূত্র ধরে তারা, ইন্দ্রা নামে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি চার মহিলার অপেক্ষা করতে থাকে পুলিশ। শুক্রবার তাঁরা ট্রেন থেকে নামতেই গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিন জন দোকানের শাটার কাপড় দিয়ে আড়াল করতেন। আর তিন জন শাটার ভাঙতেন। তার পর চলত ‘অপারেশন’। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নগদ, গয়না উদ্ধার হয়েছে।