Advertisement
E-Paper

ধর্ষিতাদের নাম জানিয়ে কোর্টে ভর্ৎসিত রাজ্য

যৌন নির্যাতিতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল ‘নির্ভয়া তহবিল’। সেই তহবিল থেকে কোন রাজ্যে কত ক্ষতিপূরণ বণ্টন হয়েছে, তা নিয়েই একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৫:২০

আইনত ধর্ষণের শিকার মহিলাদের পরিচয় গোপন রাখাই নিয়ম। সেই নিয়ম শিকেয় তুলে নির্যাতিতাদের নাম-ধাম হলফনামা দিয়ে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

একে ‘চরম আপত্তিকর’, ‘ফৌজদারি অপরাধের সমতুল’ এবং ‘আইন বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের যুগ্ম-সচিবকে তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি মদন লোকুর ও বিচারপতি দীপক গুপ্তর তোপ থেকে বাঁচেননি রাজ্যের আইনজীবীও। রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ডের উদ্দেশে বিচারপতি লোকুর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘হচ্ছেটা কী? কিছুই বুঝতে পারছি না। জানেন না, আপনাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে? আপনারা তো পিওন নন যে মামলা দায়ের করে ভুলে যাবেন! আপনারা কি জানেন না, এটা অপরাধ? আপনাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা ও ভারতীয় দণ্ডবিধিতে মামলা হতে পারে। সরকারি অফিসারদের কথা ভুলে যান। আপনারা না দেখে এই হলফনামা জমা করেন কী করে?’’

যৌন নির্যাতিতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল ‘নির্ভয়া তহবিল’। সেই তহবিল থেকে কোন রাজ্যে কত ক্ষতিপূরণ বণ্টন হয়েছে, তা নিয়েই একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যগুলির জবাব চাওয়া হয়েছিল। সেখানেই ভুল করে পশ্চিমবঙ্গ। একই গাফিলতি করেছে উত্তরাখণ্ডও। ধর্ষণের শিকার মহিলা ও কিশোরীদের নামও হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে দুই রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের আমলার পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত সচিবকেও তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। দু’সপ্তাহ পরে শুনানিতে আদালতে হাজির হয়ে তাঁদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

কোর্টের তোপের পরেই রাজ্য সরকারের অন্দরে হইচই শুরু হয়ে যায়। কী ভাবে এত বড় গাফিলতি হল, তার খোঁজ শুরু হয়। দণ্ডবিধির ২২৮-এ ধারা অনুযায়ী, যৌন নির্যাতিতাদের নাম প্রকাশ ফৌজদারি অপরাধ। তার জন্য দু’বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।

বিচারপতিরা রায়ে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরাখণ্ড নির্যাতিতাদের নাম-সহ হলফনামা জমা দিয়েছে। এ’টি চরম আপত্তিকর, আইনবিরুদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধের সমতুল। এই মামলায় আদালত-বন্ধু হিসেবে কাজ করছেন প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘নির্যাতিতাদের রক্ষা করার পুরো ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই ভাবে নাম প্রকাশ যে অপরাধ, তা কী ভাবে রাজ্য না জানতে পারে!’’ বিচারপতি গুপ্ত বলেন, এই ঘটনাকে ‘শকিং’ বললেও কম বলা হয়। বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, ওই হলফনামা আপাতত মুখবন্ধ খামেই আদালতে জমা থাকবে।

Bengal Government Supreme Court Rape Victim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy