নামের সঙ্গে অবৈধ ভাবে ডাউটফুল ভোটার (ডি ভোটার) তকমা জুড়ে অসংখ্য বঙ্গভাষীকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ বন্দি করে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে সরব হল বিজেপির লিগ্যাল সেল।
আজ সাংবাদিক বৈঠকে করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির লিগ্যাল সেলের সভাপতি জ্যোতির্ময় দাস, আহ্বায়ক বিশ্ববরণ বরুয়া জানান, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি সংশোধনের জন্য ২০১৩ সালে নির্দেশ দিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তার পরিপ্রেক্ষিতে অসম সরকার কাজ শুরু করে। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় নাগরিক পঞ্জির কাজ চলছে, তাতে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, নাগরিক পঞ্জিতে অনেক বছর ধরে অসমে বসবাসকারী ব্যক্তিদের নাম উঠছে না। লিহ্যাসি ডেটা সংগ্রহ করতেও অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নেতাদের প্রশ্ন— এনআরসি যদি দেশের তথা অসমের জনগণের স্বার্থে তৈরি করা হয়ে থাকে, তা হলে তা নিয়ে জনগণকে এত সমস্যায় পড়তে হবে কেন?
এনআরসি নিয়ে অসম সরকার রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়। বিজেপির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ২০১৪ সালের ভোটার তালিকাকে বৈধ হিসেবে উল্লেখ করছেন। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ায় তা নিয়ে এগোচ্ছেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের সামনেই এ সব কথা বলছেন। এ সব করে ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করতে চাইছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। না হলে সরকারের তরফ থেকে এতদিনে আইনের আশ্রয় নেওয়া হতো। তাঁদের আরও বক্তব্য, ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের পর ২০১৫ সালে মামলা করা খুব একটা সহজ নয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের পরই আইনের আশ্রয় নেওয়া যেত। কিন্তু অসমের কংগ্রেস শাসিত সরকার তা করেনি। এনআরসি প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ বলে বিজেপির লিগ্যাল সেলের তরফ থেকে বলা হয়, ১৯৪৭ সাল থেকেই অসমের সমস্যাকে জিইয়ে রেখেছে কংগ্রেস। বারবার বিদেশি সমস্যা নিয়ে চুক্তি করা হলেও, কার্যক্ষেত্রে তাঁরা করেনি। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন— ধর্মীয় মেরুকরণে বিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিতারিত হয়ে কেউ এলে তাঁকে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হবে। কিন্তু অসমের ক্ষেত্রে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানছে না কংগ্রেসে সরকারই। বিজেপির অভিযোগ, এনআরসি ফর্ম সংগ্রহ করার জন্য অসম সরকারের তরফ থেকে যে সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে সেগুলোর কাজ আশাবঞ্জক নয়। প্রতি দিন ১০-১৫টি ফর্ম শুধুমাত্র জমা রাখা হয়। সাধারণ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। সরকার নির্ধারিত ৩১ জুলাইয়ের ফর্ম জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়। এ দিন করিমগঞ্জ জেলা বঙ্গসাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্মেলনের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে স্মারকপত্র পাঠানো হয়। তাতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি সংক্রান্ত জটিলতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। স্বাক্ষর করেন সম্মেলনের জেলা সভাপতি সুখেন্দুশেখর দত্ত, সম্পাদক মাশুক আহমদ, রথীন্দ্র ভট্টাচার্য, নিশিকান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy