Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bus Accident

Accident: বেড়াতে গিয়ে বাস উল্টে মৃত্যু, হাত বাদ ৩ জনের

হলদিয়া থেকে তারাপীঠ হয়ে অসম-মেঘালয় ঘুরতে বেরিয়েছিল প্রায় ৬০ জনের দলটি। প্রথম থেকেই বাসের মান ও চালককে নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল যাত্রীদের।

হাসপাতালে আহত অনামিকা বাগ। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে আহত অনামিকা বাগ। নিজস্ব চিত্র —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:১৫
Share: Save:

হলদিয়া থেকে বাসে অসম-মেঘালয় ঘুরতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক মহিলার। হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছে দুই মহিলা-সহ তিন জনের।

হলদিয়ার অশোককুমার বাগের স্ত্রী অনামিকা বাগের ডান হাত বাসের জানলার বাইরে চাপা পড়েছিল। অনেক চেষ্টাতেও হাত বের করতে না পেরে জানলার কাচ দিয়ে কেটে ফেলতে হয় হাতটা। নিজে চোখে হাতের ওই অবস্থা দেখে জ্ঞান হারান অনামিকা। অশোক হাল ছাড়েননি। ক্রেন দিয়ে বাস তোলার পরে কাটা হাত কাপড়ে মুড়ে নিয়ে এসেছিলেন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, ও হাত আর জোড়া লাগবে না। উমা দাস নামে আর এক মহিলারও হাত কাটা পড়েছে। আর ভগবানপুরের যাদবকুমার মাইতির দুটো হাতই কেটে বাদ দিতে হয়েছে।

হলদিয়া থেকে তারাপীঠ হয়ে অসম-মেঘালয় ঘুরতে বেরিয়েছিল প্রায় ৬০ জনের দলটি। প্রথম থেকেই বাসের মান ও চালককে নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল যাত্রীদের। কিন্তু পাত্তা দেননি সফরের দুই আয়োজক উত্তম দাস, অনিল জানা। তারাপীঠ, শিলিগুড়ি, গুয়াহাটি হয়ে শিলং পৌঁছয় বাস। জানা যাচ্ছে, বাসচালক এই প্রথম অসমে এসেছেন। পাহাড়ি পথে চালানোর অভিজ্ঞতাই নেই তাঁর। অশোক বলছিলেন, “সোমবার দিনভর, মঙ্গলবারও রাত কাটাতে হয় বাসে। শরীর দিচ্ছিল না। বুধবার রাতটা শিলংয়ে হোটেলে কাটাতে চেয়েছিলাম। কিছুতেই মানলেন না উত্তম-অনিল।” তাঁর অভিযোগ, পাহাড়ি পথে অনভ্যস্ত চালককে জোরে চালাতে চাপ দিচ্ছিলেন উত্তম। বুধবার রাতে মেঘালয়ের ১৮ মাইল এলাকায় পাহাড়ি পথের বাঁকে উল্টে যায় বাস। দুর্ঘটনার পরে লুটপাট চলেছে বলেও অভিযোগ। জখমদের উদ্ধারের নামে কেড়ে নেওয়া হয় ব্যাগ। বের করে নেওয়া হয় টাকা ও মোবাইল। আহত মহিলাদের অভিযোগ, শ্লীলতাহানির চেষ্টাও ছাড়েনি দুষ্কৃতীরা।

বাসে ডান দিকে জানলার ধারে বসেছিলেন বাসুদেবপুরের কাজলি ভট্টাচার্য। পাশে তাঁর মেয়ে এবং স্বামী যতীন ভট্টাচার্য। কাজলি ছিটকে পড়েন রাস্তায়। পুলিশের সহযোগিতায় অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গুয়াহাটি মেডিক্যালে। বৃহস্পতিবার সেখানেই মারা যান কাজলি (৪৬)। যতীনেরও অভিযোগ, ‘‘ভ্রমণ সংস্থাটি খুবই নিম্নমানের বাস নিয়ে পাহাড়ে ভ্রমণে এসেছিল। তারই মাশুল দিতে হল আমার পরিবারকে। ঘটনার পর থেকেই চালক ও সহকারী চালকের খোঁজ নেই। স্ত্রী ৭ ঘণ্টা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পড়েছিল। চিকিৎসা হয়নি। আমি ভ্রমণ সংস্থা ও সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’’

বাসের যে সব যাত্রী কম জখম হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে উত্তম ও অনিল অন্য বাসে করে চলে গিয়েছেন। কিন্তু গুয়াহাটি মেডিক্যালে ভর্তি ১৭ জন যাত্রী ও তাঁদের পরিবার এখন অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। অধিকাংশের হাতে থাকা-খাওয়ার টাকা নেই। আটকে পড়া যাত্রীদের ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য সভার সাংসদ সুস্মিতা দেব। প্রদেশ কংগ্রেস ভাষিক সংখ্যালঘু শাখার চেয়ারম্যান অভিজিৎ মজুমদার হাসপাতালে গিয়ে জখমদের সঙ্গে দেখা করেন। হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ শর্মা যথাসাধ্য চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Accident Death Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE