প্রতীকী ছবি।
মসজিদের গ্রন্থাগারের তাকে সাজানো বই। ইসলামিক শিক্ষার নানা গ্রন্থের সঙ্গে রয়েছে পাঁচ খণ্ড বেদ, উপনিষদের অখণ্ড সংস্করণ। আছে অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্তের পরমপুরুষ শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ, নিমাইসাধন বসুর ভগিনী নিবেদিতা। দলাই লামা, বাবাসাহেব অম্বেডকরের জীবনীগ্রন্থের সঙ্গে অসমের ভাগাবাজার জামে মসজিদের গ্রন্থাগারে শোভিত হচ্ছে শ্যাম দুয়া সম্পাদিত ‘অটলবিহারী বাজপেয়ী’ও। বাদ যায়নি যীশু খ্রিস্টের জীবনীগ্রন্থও।
বড়সড় রিডিং রুম। নিয়মিত পাঠক। বই বাইরে নিয়ে যাওয়ার উপরে রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। এমন গ্রন্থাগার দক্ষিণ অসমের কোনও মসজিদে নেই। এর উপর মনুসংহিতা বা বিবেকানন্দের নানা লেখা মসজিদে পড়ানোর কথা আর কেউ ভাবতেই পারেন না।
১৯৪৮ সালে ভাগাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠা। ১৯৯৭ সালে বড় ধরনের সংস্কার হয় মসজিদে। তখনই সচিবের দায়িত্ব নেন স্থানীয় এমসিডি কলেজের ইংরেজির শিক্ষক সাবির আহমেদ চৌধুরী। তিনিই মসজিদে একটি গ্রন্থাগার তৈরি করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সমস্ত ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের ব্যবস্থাও করেন তিনি।
এই ধরনের প্রায় সব কাজেই শুরুতে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়। সাবির আহমেদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তিনি জানান, গ্রন্থাগার তৈরি হওয়ার আগে থেকেই মসজিদে সমস্ত ধর্ম সম্পর্কে জানার ব্যাপারে কথাবার্তা বলতে শুরু করি। এমনকী, মসজিদের প্রথম হাফিজ আব্দুস সালামের স্মৃতিতে তাঁর পরিবার ৪০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে তাঁদেরও কী ধরনের বই কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট করে জানানো হয়। কোনও মহল থেকেই কোনও আপত্তি ওঠেনি।
শুধু কি আর সাজিয়ে রাখা। নিয়মিত পাঠকরা এসে তফসির ইরনে কাসির, তফসিরে জালালাইন, মারেফুল কোরানের সঙ্গে রিডিং রুমে বসে কেউ পড়েন বেদের তৃতীয় খণ্ড। কেউ ওল্টান দ্য বাইবেল, দ্য কোরান অ্যান্ড সায়েন্সের পাতা। আর তা দেখে বিজেপি নেতা তথা অসম মন্ত্রিসভার সদস্য পরিমল শুক্লবৈদ্য গ্রন্থাগারের ভিজিটরস বুকে লিখে এসেছেন, ‘‘জীবনের কিছু ভাল উপলব্ধির মধ্যে আরও একটা স্মৃতি যোগ হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy