Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সারা জীবন সংস্কৃত পড়েছি, কখনও মনে হয়নি আমি মুসলিম, বলছেন ফিরোজ খান

১২ দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন জয়পুরের রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থান থেকে ডক্টরেট ফিরোজ।

অধ্যাপক ফিরোজ খান।

অধ্যাপক ফিরোজ খান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

সংস্কৃতের অধ্যাপক অথচ ধর্মে মুসলিম। আর তা নিয়েই বিক্ষোভের জেরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএইচইউ)। অধ্যাপক ফিরোজ খানের মন্তব্য, ‘‘সারা জীবন সংস্কৃত পড়েছি। কখনও মনে হয়নি আমি মুসলিম। কিন্তু পড়াতে চলেছি যখন, সব আলোচনাই আমাকে নিয়ে...।’’ বিক্ষোভের মধ্যে নিখোঁজ ওই অধাপক। বন্ধ তাঁর মোবাইল ফোনও। এরই মধ্যে একটি সংবাদপত্রে এ সব কথা বলেছেন তিনি।

১২ দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন জয়পুরের রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থান থেকে ডক্টরেট ফিরোজ। কিন্তু ওই নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেছে এক দল ছাত্র। গত কাল সংস্কৃত বিভাগের জনা কুড়ি পড়ুয়া উপচার্যের বাড়ির বাইরে ধর্না দেন। অধ্যাপককে তাড়াতে যজ্ঞের ব্যবস্থাও হয়েছে। গোটা ঘটনায় হতাশ ফিরোজ বলেন, ‘‘দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে সংস্কৃত পড়তে শুরু করেছিলাম। বাঙ্গরুতে আমার বাড়ি। সেখানকার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। কোনও মৌলবি কিংবা সমাজের কেউ আমার সংস্কৃত পড়ার দিকে নজরও দেননি। সত্যি বলতে কী, কোরান নিয়ে আমার জ্ঞান যতটা, সংস্কৃত সাহিত্যে তার চাইতে বেশি। সংস্কৃত সাহিত্যে আমার আগ্রহ দেখে এলাকার হিন্দু নেতারা প্রশংসা করতেন।’’

বিক্ষোভকারীদের কাছে অবশ্য সে সব গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা গবেষক কৃষ্ণ কুমারের মন্তব্য, ‘‘আমাদের ভাবনা ও সংস্কৃতির সঙ্গে যদি কারও যোগ না থাকে, তিনি আমাদের ধর্মকে বুঝবেন কী ভাবে?’’ ফিরোজ বলেন, ‘‘ছাত্ররা ভাবছে আমি মুসলিম হয়েও কী ভাবে হিন্দু ধর্মের কথা পড়াব? আমি বলতে চাই, অভিজ্ঞান শকুন্তলম কিংবা উত্তর রামচরিতমের সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই।’’ এ সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাকে যদি বেদ, ধর্মশাস্ত্র কিংবা জ্যোতিষ পড়াতে হতো, তা হলে আমি হিন্দু হলেই হয়তো ভাল হত। কিন্তু সংস্কৃত সাহিত্য পড়ানোর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্কই নেই।’’

আরও পড়ুন: জালিয়ানওয়ালা বাগও কি দখল মোদী সরকারের? শুরু বিতর্ক

অন্য বিভাগগুলির পড়ুয়া এবং অধ্যাপকেরা ফিরোজের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। ইতিহাসের অধ্যাপক মহেশপ্রসাদ আহিওয়ারের মন্তব্য, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে যাঁর, তিনিই পড়াবেন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BHU Religious Fundamentalist Religion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE