Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
NEET Scam

‘প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে নিটের! সাদা রঙের গাড়িতে ঘুরছেন চক্রীরা’! পরীক্ষা শুরু হতেই রহস্যময় ফোন পুলিশে

বিহার পুলিশের এফআইআর অনুযায়ী শাস্ত্রীনগর থানার এসএইচও অমর সিংহ জানিয়েছেন, ৫ মে দুপুর ২টোর সময় নিট পরীক্ষা শুরু হয়। ২টো ৫ মিনিট নাগাদ পুলিশের কাছে ফোন আসে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।

নিট কেলেঙ্কারি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

নিট কেলেঙ্কারি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ১০:৫৭
Share: Save:

নিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছে! সেই চক্রের কয়েক জন সদস্য সাদা রঙের গাড়িতে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন। ৫ মে নিট পরীক্ষার দিনই বিহার পুলিশের কাছে ‘রহস্যময়’ একটি ফোনকল আসে। আর সেই ফোনই নিট কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস করেছে।

কী ভাবে এই কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস হল? বিহার পুলিশের করা এফআইআর অনুযায়ী— শাস্ত্রীনগর থানার এসএইচও অমর সিংহ জানিয়েছেন, ৫ মে দুপুর ২টোর সময় নিটের পরীক্ষা শুরু হয়। ঠিক ২টো ৫ মিনিট নাগাদ ফোন আসে, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) আয়োজিত নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে। কিছু ছাত্র এবং পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কিছু কর্মীর যোগসাজশ রয়েছে এই কাজে। সেই ফোন পাওয়ার পরই ওই গাড়ির খোঁজ শুরু হয়।

বেলি রোডের রাজবংশী নগর মোড়ের কাছে নাকাতল্লাশি শুরু করে পুলিশ। ‘রহস্যময়’ যে ফোনটি এসেছিল, তাতে বলা হয়েছিল রেনো ডাস্টার গাড়িতে ওই চক্রের সদস্যরা ঘুরছেন। ফোনের সেই বর্ণনা অনুযায়ী, বেলি রোডে একটি সাদা রঙের রেনো ডাস্টার গাড়িকে আসতে দেখে পুলিশ সেটিকে আটকানোর চেষ্টা করে। ওই গাড়িতে তিন জন ছিলেন। চালক গাড়ি ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই গাড়িকে তাড়া করে পুলিশ ধরে ফেলে। গাড়িতে যে তিন জন ছিলেন তাঁরা হলেন সিকন্দর যাদবেন্দু, অখিলেশ কুমার এবং বিট্টু কুমার।

গাড়ি তল্লাশি করতে চাইলে পুলিশকে বাধা দেন ওই তিন জন। পরে পুলিশ তল্লাশি শুরু করলে গাড়ির ভিতর থেকে নিট পরীক্ষার চারটি অ্যাডমিট কার্ডের ফোটোকপি পায়। এফআইআর অনুযায়ী, সেই অ্যাডমিট কার্ডগুলি ছিল, অভিষেক কুমার, শিবনন্দন কুমার, আয়ুষ রাজ এবং অনুরাগ যাদবের। ঘটনাচক্রে, এই অনুরাগ যাদবের পিসেমশাই সিকন্দর। গাড়ির তিন সওয়ারিকে এর পরই গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় সিকন্দর স্বীকার করেছেন যে, তাঁদের কিছু পরীক্ষার্থী পটনার আলাদা আলাদা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন। সিকন্দরের দাবি, ওই পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্র জোগাড় করার কাজ করেছিলেন রাজীব সিংহ, রকি নীতীশ এবং অমিত আনন্দ। কিছু পরীক্ষার্থীকে ওঁরা নিজেদের সঙ্গে রেখেছিলেন। তাঁদের প্রশ্নপত্র দেওয়া এবং উত্তরও তৈরি করে দেওয়ার কাজ করেছিলেন অমিতরা।

৫ মে দুপুর সাড়ে ৩টে। নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর উপর মহলকে জানানো হয় পুলিশের তরফে। ধৃত তিন জনকে জেরা করে পুলিশ একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয়। সেখানে আয়ুষ রাজ পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। (যাঁর অ্যাডমিট কার্ডের ফোটোকপি পাওয়া গিয়েছিল সিকন্দরদের কাছে।) পরীক্ষা শেষ হতেই আটক করা হয় আয়ুষকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, রামকৃষ্ণনগর থানার অন্তর্গত লার্ন বয়েজ় হস্টেল এবং লার্ন প্লে স্কুলে পরীক্ষার আগের দিন অর্থাৎ ৪ মে রাতে তাঁদের নিয়ে দিয়ে নিটের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, উত্তরও তৈরি করানো হয়। আয়ুষ আরও জানান, তিনি শুধু একা নন, ২০-২৫ জন পরীক্ষার্থীকে ওই প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিহার পুলিশ এবং আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা চার পরীক্ষার্থী অভিষেক, শিবনন্দন, আয়ুষ এবং অনুরাগকে গ্রেফতার করে।

অন্য বিষয়গুলি:

NEET Scam 2024 Bihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE