টাকা নিয়ে অপরাধীদের টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন খোদ বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজকুমার সিংহ। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিবের অভিযোগ, ‘‘জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে দাগী অপরাধীদেরও টিকিট দিয়েছে দল।’’
এর আগে পটনার সাংসদ-অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিংহ দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। কোনও ভাবেই তাঁকে বশ করতে পারেনি অমিত শাহ-ভূপেন্দ্র যাদবরা। সেই ক্ষত শুকোতে না শুকোতেই আর কে সিংহ ফের তোপ দাগলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নেমেছেন দলের সভাপতি অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। দুই নেতাই ফোনে আরার এই সাংসদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব অবশ্য আর কে সিংহের অভিযোগকে তাঁর ‘ব্যক্তিগত মতামত’ বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর মূলত যাঁর বিরুদ্ধে আরকে-র অঙুল উঠেছে সেই সুশীল মোদীর বক্তব্য, ‘‘নির্বাচনের সময়ে এ ধরনের অভিযোগ উঠতেই থাকে। কোনও অপরাধীকে টিকিট
দেওয়া হয়নি।’’ তবে আর কে সিংহের অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে নতুন করে হাতিয়ার পেয়েছে বিরোধীরা। জেডিইউ নেতা তথা রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী শ্যাম রজক বলেন, ‘‘বিজেপি কতটা সৎ তা জেনে গিয়েছেন আর কে সিংহও। তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এর তদন্ত হওয়া উচিত।’’ শিক্ষামন্ত্রী পি কে শাহি বলেন, ‘‘আর কে সিংহ বিজেপির সততার মুখোশ খুলে দিয়েছেন।’’
আজ সকালে আর কে সিংহ সাংবাদিকদের কাছে নিজের বলেন, ‘‘অনেক জনপ্রিয় বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হয়নি। টাকা নিয়ে অপরাধীদের টিকিট দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে নেতা-কর্মীরা নারাজ। যার ফল নির্বাচনে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।’’ প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীলকুমার মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। ফোন করলে সুশীলবাবু তা ধরেন না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আরকে।
উল্লেখ্য, মনমোহন সিংহ জমানায় আরকে ছিলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে। অবসরের পরেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। লোকসভায় তাঁকে প্রার্থী করেন নরেন্দ্রমোদী-রাজনাথ সিংহরা। আরা আসন থেকে জিতে তিনি লোকসভার সাংসদ হন। তা নিয়েও তখন কম জল ঘোলা হয়নি। আজ আর কে সিংহের বক্তব্য জানার পরে দলের নেতারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিংহ, দু’জনেই প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তাতে তিনি ক্ষান্ত দেননি। তিনি জানান, ‘‘দলের নেতাদের বাস্তব জানা উচিত। এমন চলতে থাকলে বাকি দলগুলির সঙ্গে বিজেপি বা এনডিএর কোনও পার্থক্য থাকবে না।’’ সুশীল মোদী অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে পাল্টা কোনও অভিযোগ করেননি। ফোন না ওঠানোর বিষয়ে তাঁর সাফাই, ‘‘হয়তো তিনি যখন ফোন করেছিলেন তখন আমি তা দেখিনি। জেনেশুনে আমি এমন করি না।’’ তবে দলেরই একটি অংশের মত, ভোটের আগে সুশীল মোদীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আরকে-কে দিয়ে তোলানো হয়েছে। এর পিছনে আরও বড় কোনও মাথা আছে। তাঁদের লক্ষ্য, মুখ্যমন্ত্রীর দৌড় থেকে সুশীল মোদীকে ছিটকে দেওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy