E-Paper

জাতপাত দেখে ৪ রাজ্যে দায়িত্ব বণ্টন বিজেপির

কর্নাটকে দলের পরাজয়ে কার্যত কেঁপে গিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ও লোকসভার আগে দল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানোর পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ০৬:০৭
narendra modi.

ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার রায়পুরে। পিটিআই।

ভোটমুখী ৪ রাজ্যে আজ দলের নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের নাম ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। আসন্ন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে মিজোরামকে বাদ দিয়ে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান ও তেলঙ্গানায় দলের শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসাবে আজ নিয়োগ করেছে দল। একই সঙ্গে আজ দিল্লিতে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে উত্তর জ়োনের রাজ্যগুলির পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। ভোটে প্রতিটি বুথ থেকে দলীয় প্রার্থীরা যাতে ৫১ শতাংশ ভোট পায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে রাজ্যের প্রতিনিধিদের।

কর্নাটকে দলের পরাজয়ে কার্যত কেঁপে গিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ও লোকসভার আগে দল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানোর পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদী খুব ভাল করেই বুঝতে পারছেন, লোকসভার আগে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে ভাল ফলই তাঁর তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত করতে পারে। ইতিমধ্যেই চার রাজ্যে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের রদবদল সেরে ফেলা হয়েছে। আজ পরবর্তী পদক্ষেপে ভোটের অন্তত তিন-সাড়ে তিন মাস আগেই চার ভোটমুখী রাজ্যে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি, যাতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে ভোট ময়দানে ঝাঁপাতে পারেন তাঁরা।

আজ যে রাজ্যগুলিতে নিয়োগ হয়েছে তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সরকার রয়েছে। কর্নাটকের ধাঁচে ওই রাজ্য ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে তলেতলে পাল্টা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। ওই রাজ্য জয় নিশ্চিত করতে তাই দল নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে ভূপেন্দ্র যাদবকে। সহকারী হিসাবে থাকছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ভূপেন্দ্র ওবিসি আর অশ্বিনী ব্রাহ্মণ নেতা। তাই রাজ্যের ওবিসি জনসংখ্যার পাশাপাশি উচ্চ বর্ণকে ভরসা জোগাতে অশ্বিনীর মতো ব্রাহ্মণ নেতাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পাশের ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। ওই রাজ্যে প্রধান ও সহকারী নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওম মাথুর ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়াকে। এখানেও কায়স্থ ও পিছিয়ে থাকা ওবিসি-কে কাছে টানার লক্ষ্যে ওই দুই নেতাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যাতে উভয় সম্প্রদায়ের ভোট টানা সম্ভব হয়।

কর্নাটক নির্বাচনে হেরে গেলেও, ওই রাজ্যের ব্রাহ্মণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে রাজস্থানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সহকারী হিসাবে জাঠ ভোটের কথা ভেবে কুলদীপ বিষ্ণোই ও গুজরাতের পাটিদার তথা ওবিসি সমাজেরনেতা নিতিন পটেলকে বেছে নিয়েছে দল। রাজস্থানে জাঠ ভোট সরকার গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এক সময়ে কংগ্রেস নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের কাছের লোক বিষ্ণোইকে জাঠ ভোট টানতে মাঠে নামাচ্ছে বিজেপি। চতুর্থ রাজ্য তেলঙ্গনায় ক্ষমতা দখলের মতো জায়গায় নেই বিজেপি। কিন্তু দল জানে ওই রাজ্যে বিধানসভায় যত শক্তি বৃদ্ধি হবে তত লোকসভায় ভাল ফল করবে দল। তাই ওই রাজ্যের নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রকাশ জাভড়েকরকে। সহকারী করা হয়েছে ওই রাজ্যেই দলের দায়িত্বে থাকা সুনীল বনসলকে।

এ দিকে গত কাল গুয়াহাটিতে পূর্ব জ়োনের বৈঠকের পরে আজ দিল্লিতে উত্তর জ়োনের রাজ্যগুলির দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। সূত্রের মতে, সেবা, সুশাসন ও গরিব কল্যাণ— এই থিমে হওয়া ওই বৈঠকে বুথ পর্যায়ে যারা কোনও ভাবেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন মানুষের কাছে গিয়ে দল ও সরকারের কাজের প্রচারের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। আলাদা ভাবে শক্তিশালী করার প্রশ্নে জোর দেওয়া হয়েছে প্রতিটি বুথকে। প্রতিটি বুথে অন্তত ১১ জনের একটি দল গড়ে স্থানীয় মানুষের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছে দল। ভোটের সময়ে প্রতিটি বুথ থেকে বিজেপি প্রার্থীরা যাতে ৫১ শতাংশ ভোট পান তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে বুথ কর্মীদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Election

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy