আইনশৃঙ্খলা সংস্কারে আনা তিনটি বিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আলোচনায় উঠে এল পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ।
নতুন আইনে গণধর্ষণের অপরাধ মাত্রেই কুড়ি বছরের জেল বা আজীবন কারাবাসের সুপারিশ করা হয়েছে। নাবালিকার গণধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড বা আজীবন কারাবাসের সাজার কথা বলা হয়েছে। আজ বিলগুলি নিয়ে আলোচনার সময়ে মহিলাদের উপরে যৌন নিগ্রহ রুখতে কড়া সাজার এই সিদ্ধান্তগুলি সময়োপযোগী বলে মেনে নেন উপস্থিত সব সাংসদই। তবে সূত্রের খবর, সে সময়েই বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলে ওঠেন, অভিযোগ লিপিবদ্ধ হলে তো শাস্তি হবে। পশ্চিমবঙ্গে তো ধর্ষণ এমনকি খুনের মামলাও পুলিশ দায়ের করতে চায় না। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে কিংবা সিবিআই তদন্তে নামলে তখন অভিযোগ লেখা হয়। তা শুনে বিজেপির আর এক সাংসদ তথা প্রাক্তন আইপিএস অফিসার সত্যপাল সিংহ কটাক্ষ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তো এ দেশের আইন চলে না। যখন বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে বিজেপি সাংসদেরা এই সব মন্তব্য করেন, বাংলার কোনও বিরোধী সাংসদ কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না বলেই খবর।
আজকের আলোচনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, সম্পত্তির লোভে ভুয়ো মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও সরব হন অনেক সাংসদ। সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রেও বাংলার উদাহরণ টানেন দিলীপ। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধীদের পুলিশ ভুয়ো মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়, এই অভিযোগ তোলেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র কর্তাদের পক্ষ থেকে তার পাল্টা জবাবে বলা হয়, ভুয়ো মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে যদি কোনও পুলিশ কর্মীর যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে নতুন আইনে। একই ভাবে নতুন আইনে পুলিশ কর্মীরা অভিযোগ নথিভুক্ত না করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।
আজ দণ্ড সংহিতা বিলগুলি নিয়ে আলোচনার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির কাছে কারাগার সংস্কার সংক্রান্ত রিপোর্টটি পেশ করা হয়। সূত্রের মতে, ওই রিপোর্টে কমিটির কোনও সুপারিশের উল্লেখ না থাকায় আপত্তি তোলেন শাসক দলের দুই সাংসদ সত্যপাল সিংহ ও বি ডি রাম। দু’জনেই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। বিজেপির দুই সাংসদের আপত্তি মেনে নেন স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিজলাল। ঘটনাচক্রে যিনিও ওই দুই পুলিশ কর্তার মতোই এক সময়ে আইপিএস অফিসার ছিলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)