Advertisement
E-Paper

পাল্টা আক্রমণ নাকি উপেক্ষা, ধন্দে বিজেপি

ব্যাকফুটে ঠুকে খেলবে, না কি, এগিয়ে এসে ছক্কা! কাল সংসদে রাহুল গাঁধীর আকস্মিক চমকে থতমত বিজেপি। দল ও শরিক দলের নেতারা বলছেন, রাহুল যে ভাবে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছেন, বিজেপি নেতৃত্বের উচিত ছিল তার জবাব দেওয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৫

ব্যাকফুটে ঠুকে খেলবে, না কি, এগিয়ে এসে ছক্কা!

কাল সংসদে রাহুল গাঁধীর আকস্মিক চমকে থতমত বিজেপি। দল ও শরিক দলের নেতারা বলছেন, রাহুল যে ভাবে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছেন, বিজেপি নেতৃত্বের উচিত ছিল তার জবাব দেওয়া। সাংসদরা তার জন্য প্রস্তুতও ছিলেন। কিন্তু সংসদে দাঁড়িয়ে বেঙ্কাইয়া নায়ডুই তাঁদের নিরস্ত করেন। এই অবস্থায় ‘নতুন’ রাহুলকে কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে এখনও ধন্দে বিজেপি নেতৃত্ব।

কারণ, খোদ নরেন্দ্র মোদী মনে করেন, রাহুল যতই ব্যক্তিগত আক্রমণের পথ বেছে নিন না কেন, বিজেপির সেই নেতিবাচক পথ নেওয়া উচিত নয়। বরং সরকারের ইতিবাচক দিকগুল‌োই আরও বেশি করে তুলে ধরা উচিত। যার মধ্যে দিয়েই অনায়াসে বেরিয়ে পড়বে ইউপিএ-র সঙ্গে এনডিএ জমানার ফারাক। এর সঙ্গে একটু-আধটু রাজনৈতিক আক্রমণ অবশ্য চলতে পারে।

আজ সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের গতকালের বক্তৃতার তারিফ করেন মোদী। রাধামোহন রাহুলের বিদেশ সফরের প্রসঙ্গ না তুলেই হাল্কা ছলে বলেছিলেন, ‘‘আপনাকে (এ দেশে) স্বাগত।’’ এর সঙ্গেই কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগকে সবিস্তার মেলে ধরেছিলেন তিনি।

কিন্তু দল ও শরিকদের অনেক নেতাই চান, নতুন রূপে আবির্ভূত রাহুলকে সরাসরি আক্রমণ করা উচিত। অতীতে নরেন্দ্র মোদীকে নানা ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসের অনেক নেতা। বিজেপি তখনও তার জবাব দেয়নি। এখন ফের যখন রাহুল আক্রমণ শুরু করেছেন, তখনও চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। বরং কালই সংসদে দাঁড়িয়ে রাহুলকে যদি তাঁর অজ্ঞাতবাস নিয়ে প্রশ্ন করা হত, তা হলেই কংগ্রেস ব্যাকফুটে চলে যেত বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতারা তার সুযোগই দিলেন না। প্রথম দিকে বিজেপি সাংসদরা এই প্রশ্ন করার জন্য ইতিউতি উঠেও দাঁড়াচ্ছিলেন। কিন্তু বাদ সাধেন বেঙ্কাইয়াই।

দল ও শরিক নেতাদের মনোভাব টের পেয়ে আজ মোদীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন দলের কিছু শীর্ষ নেতা। সেখানে ঠিক হয়, দলের নেতাদের শান্ত করতে রাহুলকে আক্রমণ করা হোক। কিন্তু এখনই পুরোদস্তুর নিশানা করার সময় আসেনি। কারণ, মাত্র একটি-দু’টি বক্তৃতা দিয়েই রাহুল যে কংগ্রেসকে পুরো চাঙ্গা করতে পারবেন, সেটি এখনই বলা যায় না। অতীতেও তিনি জয়পুর ও দিল্লিতে ভাল বক্তৃতা দিয়েছেন। তারপরেও তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। আর লোকসভা নির্বাচনে তিনি সামনে থাকলেও কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে।

তবে দলের নেতাদের মন রাখতে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আসরে নামেন। বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘স্বার্থসিদ্ধির জন্য খারাপ লোকেরা ভাল সাজতে পারেন। এমনকী ভাল জিনিসকেও খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারেন।’’ রবিশঙ্কর প্রসাদ রাহুলের ‘স্যুট-বুটের সরকারের’ জবাব দিয়ে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের তো স্যুটকেসের সরকার ছিল।’’ তার অবশ্য পাল্টা জবাব দিয়ে কং‌গ্রেসের শাকিল অহমেদ বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দশ লাখের স্যুটটিও স্যুটকেসে এসেছে। তার নিলামের চার কোটি টাকাও নিশ্চয় স্যুটকেসে এসেছে।’’

বিজেপি নেতৃত্ব এই ‘তু তু-ম্যায় ম্যায়’ রাজনীতি থেকেই বেরিয়ে আসতে চায়। কারণ, কংগ্রেসের এই রাজনীতির ফাঁদে পা দিলে সরকারের সাফল্যগুলো হারিয়ে যাবে। আবার বিজেপির কিছু নেতা যে ভাবে খেপে আছেন, তাঁদের কথা ভেবে কিছু না বললেও নয়। আপাতত তাই মধ্যপন্থা নিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী দিনে রাহুল কতটা সফল হতে পারেন, তার উপরেই নির্ভর করবে বিজেপির পরবর্তী রণকৌশল।

new delhi Rahul Gandhi Narendra Modi Parliament Congress Bjp shakil ahmed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy