সোমবার, ২১ জুলাই শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। তার আগেই দলের নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার পক্ষপাতী বিজেপি। সূত্রের মতে, সব ঠিক থাকলে আগামী রবিবার সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেবেন সর্বসম্মত কোনও দলীয় নেতা।
দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি ও আরএসএসের মতানৈক্যের কারণে ঝুলে রয়েছে বিজেপি সভাপতি বাছাইয়ের কাজ। সূত্রের মতে, আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। নিয়মরক্ষার ওই বৈঠকে পরবর্তী সভাপতির নাম নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বিজেপি সূত্র জানিয়েছে, আজ রাতে জে পি নড্ডার বাড়িতে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ-সহ অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বৈঠকের বিষয়বস্তু জানানো না হলেও, সূত্রের মতে, আসন্ন বাদল অধিবেশনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। এ দিকে, সভাপতি প্রশ্নে আরএসএস ইতিমধ্যেই বিজেপিকে তাদের পছন্দের একাধিক নাম জানিয়ে দিয়েছে। জল্পনায় রয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত সঞ্জয় জোশীর নামও। দৌড়ে রয়েছেন আর এক আরএসএস ঘনিষ্ঠ নেতা রাজনাথ সিংহও। বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, সঞ্জয় বা রাজনাথ, কেউই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দের নেতা নন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আরএসএস সঞ্জয়ের প্রশ্নে জেদ ধরে থাকে, এবং তাঁকেই মেনে নিতে হলে তা নরেন্দ্র মোদীর কাছে ব্যক্তিগত পরাজয়ের শামিল হবে। সেই তুলনায় রাজনাথকে মেনে নেওয়া অনেক বেশি সহজ মোদী-শাহের কাছে। কারণ, রাজনাথ সভাপতি থাকাকালীন লালকৃষ্ণ আডবাণীর আপত্তি সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদীর নাম বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। রাজনাথ ছাড়াও আরএসএস ঘনিষ্ঠ দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান ও মনোহরলাল খট্টরও দৌড়ে রয়েছেন।
আরএসএসের পক্ষ থেকে দলকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে সঙ্ঘ নেতৃত্ব চাইছেন যুব নেতৃত্বকে আরও বেশি করে সামনে তুলে ধরুক বিজেপি। তা ছাড়া, বিজেপিতে যে ভাবে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের পাশাপাশি, অশ্বিনী বৈষ্ণব, হরদীপ পুরীর মতো আমলারা গুরুত্ব পাচ্ছেন, তা মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না সঙ্ঘ নেতৃত্ব। নাগপুরের বক্তব্য, এর ফলে যে সব কর্মী সংগঠনের একেবারে নিচু স্তর থেকে প্রাণপাত লড়াই করে উঠে আসছেন, তাঁরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। বাইরে থেকে আসা নেতাকে মাথার উপরে বসিয়ে দেওয়ায় কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি যেমন তৈরি হচ্ছে, তেমনই আরএসএসের আর্দশের সঙ্গে এদের সাম্যক কোনও ধারণা না থাকায়, সঙ্ঘের আদর্শ মন্ত্রকের কাজে প্রতিফলিত হতে দেখা যাচ্ছে না। তাই এ ধরনের বাইরের দল থেকে আসা নেতা ও ‘টেকনোক্র্যাট’দের যথাসম্ভব দলে কম অন্তর্ভুক্ত করতে বিজেপি নেতাদের পরামর্শ দিয়েছে আরএসএস।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)