মধ্যপ্রদেশের সমীকরণ এ বার সম্ভবত বিহারেও!
লালুপ্রসাদ-নীতীশ কুমারের রাজ্যে নির্বাচনী লড়াই ক্রমশ কঠিন হচ্ছে। বিশেষ করে রাহুল গান্ধীর ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ ভাল রকম সাড়া ফেলায়, কপালে ভাঁজ এনডিএ নেতৃত্বের। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ধাঁচেই বিহার বিজেপির একাধিক জয়ী সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে প্রার্থী করার কথা ভাবছেন পদ্ম-নেতৃত্ব। আগামিকাল বিহারে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্রের মতে, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, বিহারে এ যাত্রায় অন্তত ৩০ শতাংশ আসনে নতুন মুখ দেওয়ার কথা ভাবছে দল।
পাঁচ বছর আগে রাজ্যের ২৪৩টি আসনের মধ্যে ১১০টিতে লড়ে ৭৪টি আসন জিতেছিল বিজেপি। এ যাত্রায় প্রায় জনা পঁচিশেক বিধায়ক ও বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখে, তাঁদের সরিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপরে ভরসা রাখতে চাইছে দল। সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ, সতীশচন্দ্র দুবেরা। সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন রাজীবপ্রতাপ রুডি, সঞ্জয় জায়সওয়াল, রাধামোহন সিংহ, জনার্দন সিগ্রিওয়ালেরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দিলীপ পাণ্ডের নামও রয়েছে তালিকায়। সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই ওই নেতাদের মতামত জানতে চেয়ে দলের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে। দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘ওই সাংসদেরা সদ্য লোকসভায় জিতে এসেছেন। ফলে নিজেদের কেন্দ্রের আশপাশের বিধানসভাগুলি জেতার প্রশ্নে তাঁদের প্রভাবকে ব্যবহার করতে পারবে দল।’’
মধ্যপ্রদেশের মতোই বিহারে গত দু’দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে এনডিএ। ফলে এ বার প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া প্রবল। সঙ্গে রয়েছ গোষ্ঠীদ্বন্ধও। প্রতিটি কেন্দ্রেই রয়েছে একাধিক দাবিদার।
আর তা বুঝেই মধ্যপ্রদেশের মতোই এখানে পরিচিত তথা ভরসাযোগ্য, এমন সাংসদদের ময়দানে নামনোর কথা ভাবছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনেও ওই একই সমীকরণ মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, প্রহ্লাদ পটেল, ফগ্গন সিংহ কুলস্তের মতো নেতাদের টিকিট দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও মানুষের অসন্তোষ ছিল তা অনেকাংশেই রুখতে সক্ষম হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। সাংসদদের মধ্যে টিকিট পেয়েছিলেন রাকেশ সিংহ, গণেশ সিংহ, রীতি পাঠক, উদয়প্রতাপ সিংহেরা। টিকিট পান কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মধ্যপ্রদেশে ওই বাজি খেটে যাওয়ায় সেই নীতির এ বার বিহারে পুনরাবৃত্তি করতে চাইছে পদ্মশিবির।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)