Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি বিধায়কের ধমকে প্রকাশ্যে কান্নায় ভাঙলেন মহিলা আইপিএস

যোগীর রাজ্যে এ বার হেনস্থার শিকার এক মহিলা আইপিএস অফিসার। জনসমক্ষে তাঁকে অপমান করে করার অভিযোগ উঠল যোগীরই দলের এক বিধায়কের বিরুদ্ধে। লজ্জায়, অপমানে কেঁদে ফেলেন ওই আইপিএস অফিসার।

কেঁদে ফেললেন ওই আইপিএস অফিসার। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।

কেঁদে ফেললেন ওই আইপিএস অফিসার। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ১১:২৬
Share: Save:

যোগীর রাজ্যে এ বার হেনস্থার শিকার এক মহিলা আইপিএস অফিসার। জনসমক্ষে তাঁকে অপমান করে করার অভিযোগ উঠল যোগীরই দলের এক বিধায়কের বিরুদ্ধে। লজ্জায়, অপমানে কেঁদে ফেলেন ওই আইপিএস অফিসার।

উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের কোইলহোয়া গ্রামে বেআইনি মদের কারবারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন একদল মহিলা। পুলিশ ও প্রশাসনের মদতেই রমরমিয়ে ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। বিক্ষোভ সামাল দিতে সেখানে হাজির হয় রাজ্য পুলিশের একটি দল। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে দেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও লাঠিচার্জ করে। এতে জনাকয়েক বিক্ষোভকারী চোট পান।

আরও পড়ুন: সাংসদের ‘ঘরে’ অবাধ দোকানদারি

খবর পেয়ে তড়িঘড়ি সেখানে হাজির হন গোরক্ষপুরের বিজেপি বিধায়ক রাধামোহন দাস অগ্রবাল। সেখানে পৌঁছেই গোরক্ষপুরে প্রশিক্ষণ নিতে আসা ২০১৩ ব্যাচের আইপিএস অফিসার চারু নিগমের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। তাঁর লাঠিচার্জ করার কোনও অধিকার নেই বলে চিৎকার করতে থাকেন। ওই মহিলা পুলিশ অফিসারও চুপ থাকেননি। সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কী করা উচিত আর কী নয় তা খুব ভাল করে জানি।’’‌ তাঁর এমন নির্ভীক জবাবে ক্ষোঘে ফেটে পড়েন বিজেপি বিধায়ক। ক্ষমতা জাহির করতে সংবাদমাধ্যমের সামনেই তাঁকে ধমকাতে শুরু করেন। বলেন, ‘‘তোমার সঙ্গে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। তুমিও গায়ে পড়ে কথা বলতে এসো না। একদম চুপ করে থাকো। সীমা অতিক্রম কোরো না। ফল ভাল হবে না।’’ সকলের সামনে এ ভাবে হেনস্থা হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন চারু। পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক এসে তাঁকে সামলান। এই ঘটনাটি সামনে আসতে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মহিলা আইপিএস-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন বহু মানুষ। এত মানুষ তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় আপ্লুত চারু নিগম। তিনি কেন কেঁদেছিলেন এই প্রশ্নের উত্তর ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন তিনি। ওই মহিলা আইপিএস বলেন,‘‘প্রশিক্ষণ আমায় ভেঙে পড়তে শেখায়নি। আমার সিনিয়র অফিসার ঘটনাস্থলে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি যে ঠিক তাও জানান। আর সেই সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।’’

চারু নিগমের সেই ফেসবুক পোস্ট

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বেমালুম অস্বীকার করেন রাধামোহন। তাঁর দাবি, বেআইনি মদের কারবারের বিরুদ্ধ মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। কিন্তু ওই মহিলা আইপিএস অফিসার প্রতিবাদীদের ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেন। ৮০ বছরের এক বৃদ্ধাকে টেনে-হিঁচড়ে সরিয়ে নিয়ে যান। চোখের সামনে এই ধরনের ঘটনা সহ্য করতে পারেননি তিনি।

দেখুন সেই ভিডিও

তাই একটু ধমক দিয়েছেন।‌ এরপরেই একটি মারাত্মক অভিযোগ করেন রাধামোহন। রাজ্যে বেআইনি মদের কারবারের পিছনে পুলিশের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। যোগী সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁরই দলের এক বিধায়কের এ হেন অভিযোগে দলীয় স্তরেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE