রাহুল গাঁধী উপস্থিত ছিলেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও। তাঁদের সামনেই অস্বস্তিকর ঘটনাটা ঘটে গেল।
কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে এআইসিসি-র সদর দফতরে সনিয়া গাঁধী দলীয় পতাকা উত্তোলনের সময়ে পতাকা খুঁটি থেকে পড়ে গেল। কংগ্রেস সেবা দলের এক সদস্য অবশ্য পতাকাটি মাটিতে পড়ার আগেই ধরে ফেলেন। তারপরে সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, এআইসিসি-র সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, কোষাধ্যক্ষ পবন বনশল নিজেদের হাতেই পতাকাটি তুলে ধরেন।
স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। কংগ্রেসের একের পর এক নির্বাচনী পরাজয়ের সঙ্গে পতাকা-পতনের সাযুজ্যের দিকে ইঙ্গিত করে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র কটাক্ষ করেছেন, “পড়তে পড়তে শেষে পড়েই গেল।”
দলের ১৩৭-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সনিয়া গাঁধী অবশ্য দলের কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। তা অবশ্যম্ভাবী। মানুষের সেবায় কংগ্রেসের দায়বদ্ধতা চিরস্থায়ী। কংগ্রেস নিজের নীতি ও মতাদর্শের সঙ্গে আপস করবে না। দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে সনিয়া বলেছেন, অতীতেও দল বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। কংগ্রেস বারবারই ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও দেখিয়েছে।
সনিয়া দলের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করলেও দলের প্রতিষ্ঠা দিবসেই কংগ্রেসে ফের ভাঙন ধরেছে। তা-ও ভোটমুখী পঞ্জাবে। কংগ্রেসের দুই বিধায়ক ফতেহ সিংহ বাজওয়া ও বলবিন্দর সিংহ লাড্ডি আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফতেহ সিংহ বাজওয়া আবার কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা, রাজ্যসভার সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়ার ভাই। কিছু দিন আগেই নভজ্যোত সিংহ সিধু ফতেহকে কাদিয়াঁ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরে প্রতাপ জানান, তিনি নিজেই ওখানে প্রার্থী হতে চান। ভাইয়ের সঙ্গে লড়াইয়ে তিনি টিকিট পাবেন না বলেই ফতেহ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে কংগ্রেসের আর এক বিধায়ক রাণা গুরমিত সিংহ সোধি বিজেপিতে যোগ গিয়েছিলেন।
কংগ্রেস সূত্রের যুক্তি, এই তিন বিধায়কই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, দলত্যাগী অমরেন্দ্র সিংহর ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তাঁরা অমরেন্দ্রর তৈরি পঞ্জাব লোক কংগ্রেসে যোগ না দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপি যদি তাঁদের প্রার্থী করে এই আশায়। বিজেপি, অমরেন্দ্র, অকালি দলের বিক্ষুব্ধ ধিন্দসা গোষ্ঠীর জোট হওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৫ জানুয়ারি প্রথম পঞ্জাবে জনসভা করবেন।
সনিয়া আজ প্রতিষ্ঠা দিবসের বার্তায় বিজেপিকে নাম না করে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘৃণা-বিদ্বেষের ভিতে দাঁড়িয়ে থাকা বিভাজনকারী মতাদর্শের অনুগামীরা, যাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনও ভূমিকা ছিল না, তারাই এখন দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা ইতিহাস নতুন করে লিখছে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরার জন্য। সংসদীয় গণতন্ত্রের ঐতিহ্য নষ্ট করা হচ্ছে। কংগ্রেস এর মোকাবিলা করবে।’’ পতাকা-পতন নিয়ে বিজেপির কটাক্ষের জবাবে যুব কংগ্রেস সভাপতি শ্রীনিবাস বি ভি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এর আগে বিজেপির সদর দফতরে অমিত শাহ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময়ও তা মাটিতে পড়ে গিয়েছিল।