Advertisement
০১ মে ২০২৪
Cash for Query Row

‘কোনও শক্তিই বাঁচাতে পারবে না’! এথিক্স কমিটির বৈঠক ছেড়ে মহুয়ারা বেরোতেই খোঁচা দুবের

এথিক্স কমিটির বৈঠকে মহুয়াকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা। তার পরেই বিজেপি সাংসদের ওই মন্তব্য।

মহুয়া মৈত্র এবং নিশিকান্ত দুবে।

মহুয়া মৈত্র এবং নিশিকান্ত দুবে। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৬
Share: Save:

লোকসভার এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে লেখা মহুয়া মৈত্রের চিঠির ‘ভুল’ নিয়ে গত শুক্রবার কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত মহুয়া এবং এথিক্স কমিটির বিরোধী সদস্যেরা এথিক্স কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে ফের খোঁচা দিলেন অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সেই সঙ্গে কৌশলে গোটা বিষয়টিকে জাতপাতের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িয়ে দেওয়ায় চেষ্টা করেছেন তিনি।

নিশিকান্ত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘মহুয়া আমার বিরুদ্ধে ভুল বার্তা ছড়াতে চাইছেন। বিরোধী সাংসদেরা এক জন অনগ্রসর নেতার এথিক্স কমিটির নেতৃত্ব দেওয়ায় অসন্তুষ্ট। তাই এমনটা করেছেন।’’ সেই সঙ্গে মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদদের তোলা ‘ব্যক্তিগত প্রশ্ন’ সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করে ঝাড়খণ্ডের সাংসদ নিশিকান্তের মন্তব্য, ‘‘দর্শন হীরানন্দানি তাঁর হলফনামায় যে অভিযোগ এনেছেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিকে তা নিয়ে মহুয়াকে প্রশ্ন করতেই হত।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের সব প্রমাণ আমি দিয়েছি। কোনও শক্তিই মহুয়াকে রক্ষা করতে পারবে না।’’

প্রসঙ্গত, এথিক্স কমিটির বৈঠকে মহুয়াকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা। ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে তাঁর বক্তব্য জানার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে মহুয়া বলেন, ‘‘এটা কী ধরনের বৈঠক? ওঁরা নোংরা প্রশ্ন করছেন।’’ মহুয়াকে অনৈতিক এবং অপমানজনক প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এথিক্স কমিটির সদস্য, বিএসপির সাংসদ দানিশ আলিও।

এথিক্স কমিটির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মহুয়াকে দু’টি প্রশ্ন করা হয়েছে। এক, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে সংসদের লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন কি না। দুই, বিদেশ থেকে মোট ৪৭ বার ওই আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করা হয়েছে কি না। অন্য দিকে, মহুয়ার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সাংসদ এথিক্স কমিটিকে জানিয়েছেন, ‘ব্যক্তিগত সম্পর্কের তিক্ততা’ থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে নিজের প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে একহাত নিয়েছেন মহুয়া। সূত্রের খবর, সেই সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে মহুয়াকে। তবে বিজেপি সাংসদ ভিডি শর্মা মহুয়াকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের পরিবর্তে অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে বলেছেন। ব্যবসায়ী হীরানন্দানিকে সংসদের লগইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ করার কথা স্বীকার করেননি মহুয়া।

‘প্রশ্ন-ঘুষ’ কাণ্ডে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেন মহুয়া। কমিটি সূত্রের খবর, প্রথমে সংসদের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কয়েক জনের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়। তার পর মহুয়ার বয়ান নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বের প্রায় আড়াই ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর একটি বিরতি হয়। তার পর আবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয় বলে জানা যায়। তখনই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা।

মহুয়ার বিরুদ্ধে নিশিকান্তই অভিযোগ তুলেছিলেন যে ব্যবসায়ী হীরানন্দানির থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন তিনি। সেই প্রশ্নের নিশানায় ছিলেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। অনেক সময়ই নিশানা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। গত ২৬ অক্টোবর এই কাণ্ডে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এথিক্স কমিটি। এর আগে মহুয়া লোকসভার এথিক্স কমিটিকে চিঠি দিয়ে জানান, কমিটি গত দু’বছর ধরে কোনও বৈঠক ডাকেনি।

পাশাপাশি, কমিটিকে তার লক্ষ্মণরেখাও মনে করিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদ। কমিটি সূত্রে জানা যায়, তিনি লেখেন, এথিক্স কমিটি কোনও ফৌজদারি বিষয়ে তদন্ত করতে পারে না। তার জন্য পৃথক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রয়েছে। মহুয়ার আরও অভিযোগ, সংসদে কেন্দ্রীয় শাসকদলের যে গরিষ্ঠতা রয়েছে, ক্রমাগত তার অপব্যবহার হচ্ছে। কমিটির ক্ষেত্রেও সেই অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই চিঠির একটি বানানে ‘ভুল’ নিয়েও খোঁচা দিয়েছিলেন নিশিকান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE