পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সময়ে মহিলাদের লড়াই করা উচিত ছিল। তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতে পারত। শনিবার চণ্ডীগড়ের একটি জনসভা থেকে এমনটাই মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা। সেই মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের মুখে এ বার ক্ষমা চেয়ে নিলেন তিনি। জানালেন, তাঁর মন্তব্যে কারও মনে আঘাত লেগে থাকলে ক্ষমা চাইতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। তবে যে ভাবে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা ভুল। এই অর্থে কথাটি তিনি বলতে চাননি, দাবি বিজেপি সাংসদের।
রবিবার একটি ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন রামচন্দ্র। বলেছেন, ‘‘আমার দেশের মহিলাদের কোনও ভাবেই আমি দুর্বল মনে করি না। পহেলগাঁওয়ে যাঁরা স্বামীকে হারিয়েছেন, আমরা তাঁদের পাশে আছি। সেই সমস্ত পরিবারের পাশে আছি। তবু, আমার মন্তব্যে যদি কারও অনুভূতিতে আঘাত লেগে থাকে, ক্ষমা চাইতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।’’
আরও পড়ুন:
কী বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ? শনিবার সন্ধ্যায় মরাঠা শাসক অহল্যাবাঈ হোলকারের ৩০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চণ্ডীগড়ে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে কথা বলতে গিয়ে পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ তোলেন রামচন্দ্র। বলেন, পহেলগাঁওয়ে মহিলা পর্যটকদের লড়াই করা উচিত ছিল। আমার বিশ্বাস তাঁরা যদি জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করতেন তবে হতাহতের সংখ্যা কম হত। যদি সব পর্যটক অগ্নিবীর হতেন, তবে তাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবিলা করতে পারতেন। আমাদের দেশের বোনেদের মধ্যে অহল্যাবাঈ বা ঝাঁসির রানি লক্ষীবাঈয়ের মতো সাহসিকতা, চেতনা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।’’
রামচন্দ্রের এই মন্তব্যের পর বিতর্কের ঝড় ওঠে। কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূলের মতো বিরোধীরা একযোগে আক্রমণ করে তাঁকে। অভিযোগ করা হয়, বিজেপি সাংসদ আসলে নারী বিদ্বেষী। অস্বস্তি পড়ে বিজেপিও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর জানান, রামচন্দ্রের এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। দলের অবস্থান এটা নয়। তবে ক্ষমা চাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে চর্চা এখানেই থেমে যাওয়া উচিত বলে মনে করেছেন খট্টর।
রামচন্দ্র রবিবার বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের দেশের মহিলারা সাহসী। শুধু তাঁদের মধ্যে অহল্যাবাঈ বা ঝাঁসির রানির মতো চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে। যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি এলে তাঁরা লড়াই করতে পারেন। আমি আমাদের দেশের বীরাঙ্গনাদের শ্রদ্ধা করি। এই অর্থেই যা বলার বলেছিলাম। কিন্তু আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। যাঁরা রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন, ঈশ্বর তাঁদের সৎবুদ্ধি দিন।’’
রবিবার এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে নেতাদের ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করতে বারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ভারতীয় সেনা আধিকারিক কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী। সোফিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলেছিলেন তিনি। ক্ষমা চাওয়ার পরেও সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে ভর্ৎসনা করেছে।