দলের সর্বভারতীয় সভাপতির মুখ কে হবেন, তা নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের মতানৈক্য এখনও জারি রয়েছে। এই আবহে চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে অভ্যন্তরীণ বৈঠকে বসছেন আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, বৈঠকের ফাঁকে সভাপতি কে হবেন তা নিয়েও আলোচনায় বসতে চলেছে বিজেপি ও আরএসএস। নতুন মুখ নিয়ে ঐকমত্য না হলে, বিহার বিধানসভা ভোট পর্যন্ত বর্তমান সভাপতি জে পি নড্ডাকেই রেখে দেওয়ার কথা ভেবে রেখেছে দল।
তবে ওই বৈঠকের আগে রাজ্য পর্যায়ে যত বেশি সংখ্যক সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলার পক্ষপাতী বিজেপি। কারণ বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী, কেন্দ্রশাসিত ও রাজ্য মিলিয়ে ১৯ জন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হলে তবেই জাতীয় সভাপতি নির্বাচন হওয়া সম্ভব। আজ মিজ়োরামের বিজেপি সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ায় সব মিলিয়ে ১৫ জন সভাপতি নির্বাচিত হলেন। দলের লক্ষ্য ছিল, তেলঙ্গানা, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতেও সভাপতি নির্বাচন সেরে রাখা। কিন্তু তা করতে গিয়ে তেলঙ্গানা ও ত্রিপুরায় অভ্যন্তরীণ বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে দল। ত্রিপুরায় রাজ্য সভাপতি হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পছন্দ ছিলেন আরএসএস ঘনিষ্ঠ ভগবান দাস। কিন্তু সূত্রের খবর, তাঁর নামে আপত্তি জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ফলে সভাপতি নির্বাচন অনির্দিষ্ট কালের জন্য থমকে গিয়েছে।
অন্য দিকে তেলঙ্গানায় প্রাক্তন বিধান পরিষদ নেতা রামচন্দ্র রাও আগামী রাজ্য সভাপতি হতে পারেন বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠতেই আজ বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিধায়ক টি রাজা সিংহ। তাঁর মতে, রামচন্দ্র রাওয়ের মতো নেতাকে দলের রাজ্য সভাপতি করা হলে তেলঙ্গনাতে দল পথ হারাবে। বসে যাবেন ওই রাজ্যে দলের একনিষ্ঠ কর্মীরা। মহারাষ্ট্রে সভাপতি নির্বাচনের প্রশ্নে দশ জনের নাম জমা পড়েছিল। সূত্রের মতে, শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্র চহ্বাণের নামেই একমত হয়েছে দল। সভাপতি বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ডেও।
রাজ্যগুলিতে তড়িঘড়ি সভাপতি নির্বাচন সেরে রাখলেও শেষ পর্যন্ত সর্বভারতীয় সভাপতি নিয়ে আরএসএসের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনের মিল হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যেই। দলের শীর্ষ সূত্রের মতে, সভাপতি মুখ নিয়ে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে দু’পক্ষের। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ কাউকে ওই পদে চান না আরএসএস নেতৃত্ব। উল্টে নতুন সভাপতি এনে বিজেপিকে ২০২৯ সালের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ নতুন করে গড়ে তুলতেই চাইছেন আরএসএস নেতারা। ৪-৬ জুলাই দিল্লিতে আরএসএসের তিন দিনের সাংগঠনিক বৈঠক হতে চলেছে। সূত্রের মতে, মতপার্থক্য কাটাতে ওই বৈঠকের ফাঁকে আলোচনায় বসবেন দু’পক্ষ। তার উপরেই নির্ভর করছে নড্ডার সভাপতিত্বের মেয়াদ। একটি সূত্রের দাবি, এ যাত্রাতেও ঐকমত্য না হলে বিহারের ভোট পর্যন্ত নড্ডাকে রেখে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)