তেজপ্রতাপ যাদব
তিনি তেজপ্রতাপ। লালু প্রসাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র। হিন্দি বলয়ের সামাজিক নিয়মে পিতার প্রধান উত্তরাধিকারী তিনিই। অথচ সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে দ্রুত উঠে আসছেন তাঁর ভাই। দাদাকে ছাপিয়ে চোখে পড়ার মতো রাজনৈতিক আলোকবৃত্তে রয়েছেন লালুর কনিষ্ঠ পুত্র, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। বাবার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছেন তিনিই।
পরিবারের অন্দরে চোরা টানাপড়েন চলছিলই। এই অবস্থায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘সুনজর’ পড়েছে তেজপ্রতাপের দিকে। তাঁর জন্য ‘ওয়াই’ শ্রেণির নিরাপত্তা বলয় ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অথচ গুরুত্বের দিক দিয়ে এই নিরাপত্তা পাওয়ার কথা তেজস্বীরই। স্বাভাবিক ভাবেই বিহারের যাদব কুলপতির পরিবারের অভ্যন্তরীণ অস্বস্তিকে আরও বাড়িয়েছে দিল্লির এই ঘোষণা।
একই সঙ্গে বিহার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও তুলে দিয়েছে বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্ত। উত্তরপ্রদেশের যাদব-পরিবারে ভাঙনের পর এ বার কি বিজেপির লক্ষ্য বিহারের যাদবকুলেও ভাঙন ধরানো? উত্তরপ্রদেশে যখন অমর সিংহকে ‘বিজেপির এজেন্ট’ বলে দাগিয়েই দিয়েছেন অখিলেশ যাদব। আর বিজেপি বার্তা দিয়েছে মুলায়ম সিংহের পাশে থাকার। বিহারে কি সেই ভাঙন-তাসই খেলছে তারা?
কেন্দ্রের যুক্তি তৈরি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানাচ্ছে, ভিড়ে নাকি মানুষের সঙ্গে মিশে যান তেজপ্রতাপ। তাই তিনিই সহজ ‘টার্গেট’। তাঁকেই খুনের ছক কষছে মাওবাদীরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা নাকি তেমনই রিপোর্ট দেন। তাই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপকে ‘ওয়াই’ শ্রেণির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত। অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে সিআরপি জওয়ানরা তেজপ্রতাপকে নিরাপত্তা দেবেন। তবে কেন্দ্র বিহার পুলিশকে এখনও তেজপ্রতাপের নিরাপত্তার বিষয়ে কিছু জানায়নি। রাজ্য পুলিশের ডিজি প্রমোদকুমার ঠাকুর বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এখনও নির্দেশ আসেনি। সুতরাং এখনও নিয়ম মেনে রাজ্যের মন্ত্রীদের যেমন নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, তেমনই হবে।’’
৫ জানুয়ারি পটনায় এসেছিলেন মোদী। অনুষ্ঠান শেষে লালুর সঙ্গে কথা বলেন। তখনই আলাপ তেজপ্রতাপের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আরে কিষণ-কান্হাইয়া!’’ মোদীর এই সম্ভাষণে খুশি তেজপ্রতাপ। ক’দিন আগেই তেজপ্রতাপের কৃষ্ণ সাজার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যাচ্ছে, পরে এ নিয়ে কেউ তাঁকে কিছু বলতে গিয়েছিলেন। তেজপ্রতাপ তাঁকে পাল্টা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ভুল কী বলেছেন! আমি তো ভগবান কৃষ্ণেরই বংশধর!’’
এর পরেই তেজপ্রতাপকে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত! মোদীর সভার মঞ্চে লালু জায়গা না পাওয়ায় বিহারের শাসক জোটে মনোমালিন্য ছিল। তার পরে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে লালুর সংসারের অশান্তি উস্কে দেওয়া ছাড়া কোনও কারণ দেখছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাই তাঁরা উত্তরপ্রদেশের ছায়া দেখছেন বিহারে। তবে কি ২০১৯-এর ভোটে বিহার দখলের নয়া ছক সাজালেন মোদী? চলছে অঙ্ক কষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy