দিসপুরের পরে গুয়াহাটি পুরসভাও দখল করল বিজেপি। হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে কংগ্রেস দুর্গ হিসেবে পরিচিত ইম্ফলের পুর-নির্বাচনেও ব্যাপক সাফল্য পেল তারা। অবশ্য সর্বকালের মধ্যে ভাল ফল করেও শেষ পর্যন্ত নির্দল বিধায়কদের দলে টেনে পুরসভা তৃতীয় দফাতেও হাতে রাখল কংগ্রেস।
কংগ্রেস গুয়াহাটি পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পরে শুক্রবারই পদত্যাগ করেছিলেন ২০১৩ সাল থেকে মেয়র থাকা আবীর পাত্র। আজ বিজেপির মৃগেন শরণিয়া মেয়রের দায়িত্ব নেন। গুয়াহাটির ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজেপির মেয়র। গুয়াহাটি উন্নয়নমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজকেন দিনটিকে ‘সোনালী দিন’ বলে মন্তব্য করেন। পশ্চিম গুয়াহাটির গতবারের বিধায়ক হেমন্ত তালুকদারকে এবার টিকিট না দেওয়ায় তিনি দল ছাড়েন। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী তথা ডেপুটি মেয়ক নীলাক্ষী তালুকদারও পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন। কংগ্রেস ছাড়েন আরও তিন সদস্য। গত কাল রাতেই বিজেপি মেয়র পদে মৃগেনবাবু ও ডেপুটি মেয়র পদে বিজুলি কলিতার নাম চূড়ান্ত করে। আজ পুরসভার সাধারণ পরিষদের বৈঠকে দু’ জনকে নির্বাচিত করা হয়। হাতে দু’বছর সময় থাকা শরণিয়া জানান, গুয়াহাটিক কৃত্রিম বন্যার সমস্যা দূর করাই তাঁর প্রধান কাজ হবে। তিনি পুরসভার পরিধিও বাড়াতে চান।
অন্য দিকে, সর্বানন্দ সোনোয়ালের প্রধান সেনাপতি হয়ে অসম জয়ের পরে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে মণিপুর পুর-নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছিল। কংগ্রেস দূর্গ বনে যাওয়া অরুণাচলে সরকার ফেলার পরে ১৫ বছরের কংগ্রেস শাসন শেষ করে অসম জয় করে বিজেপি। এর পর মণিপুর ও মেঘালয়ের দিকে হাত বাড়িয়েছে তারা। নাগাল্যান্ডে বিজেপি সমর্থিত ড্যান জোটের শাসনই চলছে।
মণিপুরে আপাতত ইম্ফল পুর ভোট দিয়ে লড়াই শুরু করে বিজেপি। সেখানে ২৭টি আসনের মধ্যে এত দিন বিজেপির কাউন্সিলার ছিলেন মাত্র এক জন। মণিপুরে বিজেপির মধ্যে ভাঙন ধরেছিল। সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষোভ ছিল। কেন্দ্র ইনারলাইন পারমিট চালু না করা ও আফস্পা প্রত্যাহার না করার এনডিএর বিরুদ্ধে ক্ষোভও ছিল চরমে। সেই অবস্থায় হিমন্ত মণিপুরে যান। দলের হাল ধরেন, জনসভাও করেন।
নির্বাচনের দিন বন্ধ ও অবরোধ অগ্রাহ্য করে ভোট পড়ে ৮২%। কাল থেকে ব্যালট গণনা শুরু হয়েছে। এদিন রাতে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হলে জানা যায় ২৭টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১২টি ও বিজেপি ১০টি আসনে জিতেছে। ৫টি আসনে জেতে নির্দল বিধায়করা। দুই দলই নির্দল বিধায়কদের দলে টানতে আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসই ৩ নির্দল বিধায়কের সমর্থন আদায় করে ক্ষমতা ধরে রাখে।
অবশ্য বিজেপির দাবি, এই ফল তাদের নৈতিক জয়ের সূচক। আগামী বছর মণিপুরে বিধানসভা নির্বাচন। বিধানসভাতে মানুষ পরিবর্তনের পক্ষেই ভোট দেবেন। মণিপুর কংগ্রেসের মুখপাত্র এন বীরেণ সিংহ মেনে নেন, রাজ্যে নির্বাচনের আগে ইম্ফলের এই ফল দলের কাছে বড় শিক্ষা। তাঁর মতে, ইনারলাইন পারমিট চালু করা নিয়ে যে তিনটি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে জমা রয়েছে-তা মঞ্জুর হতে দেরি হওয়ার কংগ্রেসের ভোট কমেছে। তবে বিধানসভা ভোটে এই ফলের কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই তাঁর বিশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy