ভোট চুরি এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণ নিয়ে আজ রাহুল গান্ধী সরব হওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে আসরে নেমে পড়ল বিজেপি। দলের হয়ে সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর অভিযোগ করলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপাল-বাংলাদেশের ধাঁচেই এ দেশেও অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছেন রাহুল গান্ধী। পাল্টা কংগ্রেসের বক্তব্য, নেপাল-বাংলাদেশের মতো যাতে পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য সাংবিধানিক সংস্থার ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করুক বিজেপি সরকার।
দেশে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রশ্ন তুলে সরব হচ্ছেন রাহুল গান্ধী। আজও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কর্নাটকের একটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রযুক্তির সাহায্যে ভোটার তালিকা থেকে কংগ্রেস ও বিরোধী সমর্থকদের নাম মুছেফেলার অভিযোগ তোলেন রাহুল। তার পরেই পাল্টা আক্রমণে রাহুলের বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ তুলে বিজেপির লোকসভা সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ‘‘দেশের নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে। অথচ রাহুল গান্ধী গণতন্ত্রকে দুর্বল করতে, নাগরিকদের বিভ্রান্ত করতে এবং বাংলাদেশ ও নেপালের মতো পরিস্থিতি এ দেশে তৈরিতে তৎপর হয়েছেন।’’ অনুরাগের মতে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বারংবার রাহুলের অভিযোগ আসলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি কংগ্রেসের অনাস্থাকেই তুলে ধরেছে। বিজেপির মতে, আমেরিকান ধনকুবের জর্জ সোরোস দীর্ঘ সময় ধরে মোদী সরকারকে উৎখাত করতে তৎপর। সেই কাজে সোরসের অন্যতম হাতিয়ার রাহুল গান্ধী। যার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেবিদেশি শক্তি।
পাল্টা কংগ্রেসের বক্তব্য, ভোটারেরা যতক্ষণ বিশ্বাস করেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তন সম্ভব, ততক্ষণ মানুষ পথে নামার মতো চরম পথ বেছে নেন না। কিন্তু নেপাল, বাংলাদেশ বা শ্রীলঙ্কায় মানুষের সে দেশের গণতান্ত্রিকব্যবস্থার প্রতি ভরসা উঠে গিয়েছিল। তারা বুঝতে পারছিলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবে সরকারপরিবর্তন সম্ভব নয়। সেই ক্ষোভে মানুষ সংসদ জ্বালিয়ে দেন, নেতাদের বাড়িতে হামলা চালান। গণতন্ত্রে আস্থা চলে গেলে এমনটা হয়। তাই প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ থেকে এ দেশের সরকারের উচিত, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির মর্যাদা ওস্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা। রাহুলের কথায়, ‘‘আমি যেটা করছি সেটা আমার কাজ নয়। আমার কাজ হল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশ নেওয়া। তাকে বাঁচানোর দায় আমার নয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাঁচানোর দায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির। কিন্তু সমস্যা হল, তারা নিজেদের কাজ করছে না। তাই আমাকে এগিয়েআসতে হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)