জয়ের পর তবসুম হাসান।ছবি— পিটিআই।
গন্না বনাম জিন্না!
উত্তরপ্রদেশের কৈরানা এবং নুরপুরের দু’টি উপনির্বাচনকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করছেন স্থানীয়রা। এক দিকে যোগী সরকারের প্রতি আখ (গন্না) চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ। অন্য দিকে, ধর্মীয় মেরুকরণ করে বিজেপির ভোট বাড়ানোর নিরন্তর প্রয়াস। প্রতীকী অর্থে তাকেই বলা হচ্ছে জিন্না।
বিরোধীদের বক্তব্য, মেরুকরণের প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। গোরক্ষপুর, ফুলপুরের পর উত্তরপ্রদেশে ফের ধাক্কা খেলেন মোদী-অমিত শাহ। জয় হল গন্নাচাষিদেরই।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিজেপির কৌশল আঁচ করেই পাল্টা পরিকল্পনা করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী, এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব এবং আরএলডি প্রধান অজিত সিংহ। কৈরানা ভোটের প্রস্তুতি বহু আগেই শুরু করে দিয়েছিলেন বিরোধীরা। অখিলেশের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন অজিতের ছেলে জয়ন্ত চৌধরি। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসাবে এমন এক জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাঁর সঙ্গে এসপি এবং বিএসপি— উত্তরপ্রদেশের দুই প্রধান দলেরই সংযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, তবস্সুম হাসানকে আরএলডি-র টিকিটে দাঁড় করানোটাই ছিল বিরোধীদের মাস্টার স্ট্রোক।
মুজফ্ফরনগরের লাগোয়া সাম্প্রদায়িক অশান্তিপ্রবণ কৈরানা কেন্দ্রটিতে প্রায় ১৬ লাখ ভোটারের মধ্যে অন্তত ৫ লাখ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। বিজেপি যে সেখানে প্রবল ভাবে মেরুকরণের চেষ্টা করবে, প্রথম থেকেই সেটা হিসেবে রাখা হয়েছিল। সে জন্যই অখিলেশ নিজে সেখানে প্রচারে আসেননি। আসতে দেননি এসপি-র আর এক নেতা আজ়ম খানকেও। এঁদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলে গত বিধানসভা নির্বাচনে হিন্দু ভোটকে একজোট করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। ফের তাঁরা প্রচারে এলে মুজফ্ফরনগরের সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার প্রসঙ্গটি তোলার সুযোগ পেয়ে যেত বিজেপি। প্রচারে সতর্ক থাকা হয়েছে এই কেন্দ্রের মধ্যে বাউলি এবং নিসারের মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতেও। তবস্সুম নিজে গুজ্জর সম্প্রদায়ের মেয়ে, বিয়ে করেছিলেন মুসলিম বিএসপি নেতাকে। তাঁকে সামনে রেখে জাঠ, মুসলিম, যাদব এবং দলিত ভোটকে একজোট করেছেন বিরোধীরা। আজ অখিলেশ বলেছেন, ‘‘যারা দেশকে ভাগ করতে চায়, তারা মুখের মতো জবাব পেয়েছে। এই জয়, কৃষক, দলিত সবার। যোগী সরকার মানুষকে ঠকিয়ে চলেছে। মানুষ তাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। কৃষকদের বলা হয়েছিল ঋণ মকুব করা হবে। উল্টে আজ তাঁদের জীবন বিপন্ন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy