Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সভাপতি না-হোন, ‘আডবাণীরই ছায়া’ অমিতে

অমিতের হাত থেকে সভাপতি পদ চলে গেলে তাঁর কী ভূমিকা হবে?

লালকৃষ্ণ আডবাণী

লালকৃষ্ণ আডবাণী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৪
Share: Save:

পরীক্ষায় বসতে-চলা পড়ুয়াদের সঙ্গে আগামী সোমবার, ২০ জানুয়ারি সকালে ‘চর্চা’ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঠিক একই সময়ে দিল্লিতেই বিজেপির সদর দফতরে আর এক পরীক্ষার পরিবেশ। সর্বভারতীয় সভাপতি পদে অমিত শাহের উত্তরসূরি বাছাইয়ের পর্ব চলবে ওই একই দিনে।

গোটা দেশে অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের পরে আজ দলের তরফে ঘোষণা করা হয়, ২০ জানুয়ারি সকাল দশটা থেকে শুরু হবে সর্বভারতীয় সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য ভোট-প্রক্রিয়া। মনোনয়ন জমা দেওয়া চলবে সকাল দশটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই হবে দেড়টা পর্যন্ত। মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যাবে বেলা আড়াইটে অবধি। যদি একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পেশ করেন ও তা গৃহীত হয়, সে ক্ষেত্রে ভোটাভুটির প্রয়োজন হলে তা হবে পরের দিন— ২১ জানুয়ারি সকাল দশটা থেকে দু’টো পর্যন্ত। এর জন্য বিজেপির সব রাজ্যের সভাপতি-সহ শীর্ষ নেতাদের দিল্লিতে ডাকা হয়েছে।

বিজেপি শিবিরের কাছে যদিও স্পষ্ট, অমিত শাহের পরে সর্বভারতীয় সভাপতি পদে অভিষেক হতে চলেছে জগৎপ্রকাশ নড্ডার। শেষ মুহূর্তে কোনও ‘অঘটন’ না ঘটলে নড্ডা ছাড়া আর কারও মনোনয়ন পেশ করারও কথা নয়। ফলে ভোটাভুটি পর্যন্ত পরিস্থিতি গড়ানোরও প্রশ্ন তেমন নেই। সোমবারই সেই কারণে নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। যদিও বিজেপির অনেকে বলছেন, আরও এক দিন পরে দায়িত্ব নেবেন নতুন সভাপতি। সে দিন প্রধানমন্ত্রীও থাকতে পারেন।

এত দিন বিজেপিতে সমীকরণ ছিল, সরকারের মাথায় নরেন্দ্র মোদী, দলের শীর্ষে অমিত শাহ। অমিতের হাত থেকে সভাপতি পদ চলে গেলে তাঁর কী ভূমিকা হবে? তিনি কি শুধুই প্রধানমন্ত্রীর অধীনে আর পাঁচ জন মন্ত্রীর মতো নিজের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সামলাবেন? নাকি এর পরেও দলে তাঁর ভূমিকা থাকবে?

বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বললেন, ‘‘এমন মনে করার কোনও কারণ নেই যে, নতুন কেউ সভাপতি হলে মোদী-শাহ জুটির প্রভাব কোনও অংশে কমবে। সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, অমিত শাহ আর সে ভাবে ‘মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট’-এর কাজটি করতে না-পারায় দলকে কী খেসারত দিতে হয়েছে! ফলে গতি বজায় রাখতে হলে অমিতের বিকল্প নেই। তবে রোজকার বিষয় সামলাবেন নতুন সভাপতি। তিনি রাজ্যওয়াড়ি সফর করবেন, ভিন্‌-রাজ্যে রাত কাটাবেন। কিন্তু অমিত শাহের নতুন ভূমিকা হবে ‘অটল জমানার আডবাণী’র মতোই।’’

সেটি কী?

বিজেপি নেতাদের মতে, বিজেপি বরাবর জুটিতে চলেছে। যখন অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আডবাণীর জমানা ছিল, সেই সময়ে বাজপেয়ী ছিলেন উদার মুখ, আডবাণী কট্টর। নরেন্দ্র মোদীর উদয়ের পরে আডবাণী অনেক নমনীয় প্রতিপন্ন হলেন, মোদী হয়ে উঠলেন ‘হিন্দু হৃদয়সম্রাট’। এখন মোদী বরং অনেক নমনীয়, আর সঙ্ঘের প্রধান কর্মসূচিগুলি রূপায়ণের একের পর এক মুখ হয়ে উঠছেন অমিত শাহ। সে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদই হোক, কিংবা রামমন্দির বা নাগরিকত্ব আইন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘অনেকের মনে হতে পারে, মোদী আর শাহের মধ্যে হয়তো দূরত্ব তৈরি হয়েছে। নাগরিকত্ব আইন সংসদে আলোচনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী থাকেননি। কিন্তু এটি আসলে জুটিরই কৌশল। আর এটিই আপাতত বজায় থাকবে। দলও চলবে সেই তালে। অটল-আডবাণী যখন সরকারে ছিলেন, সেই সময়েও কুশাভাউ ঠাকরে, বঙ্গারু লক্ষণ, জনা কৃষ্ণমূর্তি, বেঙ্কাইয়া নায়ডুরা দলের সভাপতি হয়েছেন। কিন্তু রাশ ছিল অটল-আডবাণীর হাতেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE