Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
হরিয়ানা

জমি বিতর্কে চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি

রবার্ট বঢরার জমি বিতর্কে সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী সপ্তাহেই হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে আক্রমণ তীব্র করার কৌশল নিলেন শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব। গতকাল হরিয়ানায় একাধিক প্রচারসভায় বঢরার জমি চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩৮
Share: Save:

রবার্ট বঢরার জমি বিতর্কে সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন বিজেপি নেতৃত্ব।

আগামী সপ্তাহেই হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে আক্রমণ তীব্র করার কৌশল নিলেন শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব। গতকাল হরিয়ানায় একাধিক প্রচারসভায় বঢরার জমি চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির অভিযোগ, আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ হওয়ার পরে বঢরাকে জমি বণ্টন করেছে হরিয়ানার কংগ্রেস সরকার। যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে কংগ্রেস শিবির। তাদের বক্তব্য, জমি সংক্রান্ত বিতর্ক মেটাতে একটি কমিটি গড়েছিল হুডা সরকার। সেই কমিটি গত জুলাই মাসে জানিয়ে দেয় যে, ওই জমি চুক্তি বৈধ। আজ কংগ্রেসের মুখপাত্র শাকিল আহমেদ প্রশ্ন তোলেন, “বৈধ চুক্তি নিয়ে এ ভাবে সরব হওয়া অর্থহীন। আর জুলাই মাসে মোটেই আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ ছিল না। ফলে নিয়ম ভাঙারও কোনও প্রশ্ন নেই।”

এই জমি বণ্টন নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট দিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। কমিশন রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জানাবে, কোনও নিয়ম ভাঙা হয়েছে কি না।

নির্বাচনের আগে ওই জমি বিতর্ককে খুঁচিয়ে তোলার ঘটনা থেকে স্পষ্ট, বঢরাকে আক্রমণ করে কংগ্রেস তথা দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে অস্বস্তিতে রাখতে চাইছে বিজেপি শিবির। আর তাই আজ দলগত ভাবে বঢরার পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যায় কংগ্রেস নেতাদের। যদিও গতকালের ধাঁচে আজও বঢরার বিরুদ্ধে আক্রমণ বজায় রেখেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র দাবি করেন, “এ হল হুডার পক্ষ থেকে বঢরাকে বিদায়ী উপহার। কংগ্রেস ক্ষমতা হারাবে বুঝেই এ ভাবে জমি পাইয়ে দিয়েছে।” বিজেপি বিষয়টির সিবিআই তদন্ত-ও দাবি করেছে। পাল্টা যুক্তিতে কংগ্রেসের শাকিল আহমেদের প্রশ্ন “বিজেপি যদি মনে করে জমি বণ্টনে দুর্নীতি হয়েছে, তা হলে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে কেন সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিল না?” কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, আসলে বিজেপি খুব ভাল করেই জানে বৈধ হস্তান্তরে সিবিআই তদন্ত করা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনে আগে দুর্নীতির অভিযোগটি তুলে ধরে রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা পেতে চাইছে তারা।

লোকসভা নির্বাচনেও হরিয়ানায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিল বঢরার বিরুদ্ধে ওঠা জমি দুর্নীতির অভিযোগ। মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেস যখন সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে ব্যস্ত, তখন বিজেপি কিন্তু ভরসা রেখেছে পুরনো অস্ত্রেই। দল মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিষয়গুলি তুলে ধরায় লাভবান হয় দল। লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানায় কার্যত সাফ হয়ে যায় কংগ্রেস। তাই আজ বিজেপি ফের গাঁধী-বঢরাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজণপোষণের প্রশ্নে পরিকল্পিত ভাবেই সরব হয়েছে।

পাল্টা আক্রমণে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা বানিয়েছে কংগ্রেস শিবির। এক দিকে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর প্রথম চার মাসের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব শুক্ল। অন্য দিকে, বঢরার জমি বণ্টন বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাভাষণ করছেন এই যুক্তিতেও মুখ খুলেছে দল। শাকিল আহমেদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলছেন আদর্শ আচরণবিধি জারি হওয়ার পরে ওই জমি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমাদের বলতে খারাপ লাগছে, কিন্তু বাস্তব হল, দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন মিথ্যেবাদী। গোটা দেশের সামনে মিথ্যাভাষণ করছেন তিনি।” তাঁর আরও দাবি, “নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমরাও চাই গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখুক নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনে যে বা যারা মিথ্যা কথা বলছে, তাদের ভর্ৎসনা করা হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE