রুটিন উপনির্বাচন নয়, বরং সম্মানের লড়াই হিসেবেই বিষয়টা দেখছিল গেরুয়া শিবির। লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে অযোধ্যা-সম্বলিত ফৈজাবাদ আসনটি সমাজবাদী পার্টির কাছে খোয়ানোর শোধ তোলা এবং শোক ভোলার ডাক দেওয়া হয়েছিল মিল্কীপুরে। ভাগ্যদেবী বিজেপিকে নিরাশ করেননি। অযোধ্যা জেলার মিল্কীপুর আসন বিজেপি জিতে নিল ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।
দিল্লির ভোটগ্রহণের দিনই উপনির্বাচন হয়েছিল মিল্কীপুরে। ফলও বেরোল একসঙ্গেই। গত বছর লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ জুড়েই বিজেপির ফল ভাল হয়নি। তার মধ্যে বিশাল আড়ম্বরে রামমন্দিরের উদ্বোধন সত্ত্বেও ফৈজাবাদ আসনটি হাতছাড়া হয়। তবে নভেম্বর মাসে ৯টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে বিজেপি অনেকটা ঘুরে দাঁড়ায়। সাতটি আসন দখল করে তারা। বাকি ছিল মিল্কীপুর। যেহেতু এই আসনটি অযোধ্যা জেলায় ও এই মিল্কীপুরের বিধায়কই লোকসভা ভোটে ফৈজাবাদ থেকে জেতেন, সুতরাং এই আসনে জিতলে অযোধ্যায় হারের ক্ষতে প্রলেপ পড়বে বলে প্রচার করতে থাকে বিজেপি। যোগী আদিত্যনাথ-সহ হেভিওয়েট নেতারা প্রচারে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেন। উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য সরাসরি বলে দেন, অযোধ্যার আঘাত ভুলতে এবং শোধ তুলতে মিল্কীপুর জিততেই হবে।
অন্য দিকে সমাজবাদী পার্টি ভরসা রেখেছিল যে, লোকসভার ম্যাজিকই হয়তো পুনরাবৃত্ত হবে। ফৈজাবাদে তাদের জয়ী সাংসদ তথা মিল্কীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অবধেশ প্রসাদের ছেলে অজিত প্রসাদকে প্রার্থী করেছিল তারা। সংরক্ষিত এই আসনে অজিতের বিরুদ্ধে বিজেপি দাঁড় করায় অজিতেরই মতো দলিত পাসি সম্প্রদায়ের নেতা চন্দ্রভানু পাসোয়ানকে। সেই সঙ্গে অজিতের বিরুদ্ধে পরিবারবাদের স্লোগান তোলার সুযোগও পেয়ে যায় তারা। ফল বলছে, চন্দ্রভানু অবলীলায় হারিয়েছেন অজিতকে। দৃশ্যতই কুম্ভে প্রাণহানির কোনও প্রভাব এই ভোটে পড়েনি। যোগী আদিত্যনাথ একাধারে দিল্লি এবং মিল্কীপুরের জয়কে ‘ঝুট আর লুটের রাজনীতির ইতি’ বলে ঘোষণা করেছেন। আর কেশবপ্রসাদ দাবি করছেন, মিল্কীপুরের জয় ট্রেলর মাত্র। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে পুরো ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘আভি সির্ফ ঝাকি হ্যায়, পুরি পিকচার বাকি হ্যায়।’’
বিধানসভা নির্বাচনের কথা শোনা গিয়েছে সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতা অখিলেশ যাদবের মুখেও। মিল্কীপুরে অবধেশ-পুত্রের পরাজয় যে ফৈজাবাদ জয়ের মহিমাকে খর্ব করবে, সে কথা জানেন তিনিও। অখিলেশের দাবি, নির্বাচনী আধিকারিকদের হাত করে বিজেপি জিতেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)