পশ্চিমবঙ্গে জেতা আসন ধরে রাখা যাবে তো! সেই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনের স্মৃতি এখনও টাটকা। ফলে দলীয় কর্মীদের রক্ত ঝরলেও পঞ্চায়েতে জয়ী প্রার্থীদের একটি অংশ তৃণমূলের ‘ফাঁদে পা দিয়ে’ দল বদল করেই থামবেন —এমনই আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকি, দলের কেন্দ্রীয় এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পরে জয়ী প্রার্থীদের একাংশ তৃণমূলে যোগ দেন। এ বারও যে তা হবে, ফলাফলের দিন থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’’ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তাই রাজ্য নেতৃত্বকে জয়ী প্রার্থীদের ধরে রাখার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হলে ফলাফল পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এ দিকে ভোটের পরে গণনার দিনেও যে ভাবে সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে রাজ্য, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় সরব হন বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। আজ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসন হিংসায় মদত দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্মমতার জন্য রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে ৪৫ জন মারা গিয়েছেন। যিনি মা-মাটি-মানুষের কথা বলেন, তিনি নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছেন। রাজ্যে হিংসা, সন্ত্রাস বা ভোট লুটের মতো শব্দগুলি আজ বহুল ব্যবহৃত শব্দ।’’
পাশাপাশি রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে অন্য দলগুলির কৌশলগত নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি যে বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে চলতে চাইছে, তাতে তৃণমূল অন্যতম শরিক। ফলে বিরোধী দলের রাজ্যস্তরের নেতারা তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে সরব হলেও, এ বিষয়ে কার্যত নীরব বা তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছেন ওই সব দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আজ সম্বিত বলেন, ‘‘মহা ঠগ বন্ধনের লালু প্রসাদ, নীতীশ কুমার বা রাহুল গান্ধীর মতো নেতারা আজ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে নীরব কেন?’’
পাল্টা সরব তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‘এ বারের নির্বাচনে মৃতদের ৭০ শতাংশ তৃণমূলের কর্মী। তারপরেও পাত্রের মতো নেতারা চোখে ঠু্লি পরে বসে রয়েছেন। নোট বাতিলের সময়ে নোট ভাঙাতে গিয়ে ১০৫ জন লাইনে দাঁড়িয়ে মারা যান। সিএএ-এনআরসিসি আন্দোলনের সময়ে মারা যান ৩১ জন। কৃষক আন্দোলনে মারা যান ৭০২ জন কৃষক। আর হঠাৎ করে লকডাউন হওয়ায় মারা যান ৯৮৯ জন। এর থেকেই বোঝা যায় বিজেপি কতটা নির্মম!’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)