প্রতীকী ছবি।
ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন মেলেনি ‘ধর্ষিতা’র শরীরে। তা সত্ত্বেও কোনও এক জনের পক্ষে একই সময়ে তার নিজের জামাকাপড় খুলে, অন্য কারও জামাকাপড় খুলিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করা আদৌ সম্ভব নয়। দু’জনের সম্মতিতেই হয়েছে ওই শারীরিক মিলন। ধর্ষণের দায়ে শাস্তি পাওয়া এক আসামিকে এই যুক্তিতেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছেন বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা।
‘পকসো’ আইনে শিশুদের যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞা নিয়ে বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চের এই মহিলা বিচারপতির একটি পর্যবেক্ষণ ও রায়ের উপর দিনকয়েক আগেই স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পর সামনে এল এই রায়।
বিচারপতি গানেদিওয়ালা তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্টেও ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন মেলেনি। তা সত্ত্বেও অভিযুক্তের পক্ষে একই সময়ে তার নিজের জামাকাপড় খুলে, অন্য কারও জামাকাপড় খুলিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করা আদৌ সম্ভব নয়। দু’জনের সম্মতিতেই হয়েছে ওই শারীরিক মিলন।’’
এর আগে বিশেষ শুনানি আদালতে অভিযুক্তকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিল। যবতমালের বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সি অভিযুক্ত সুরজ কাসারকার তাঁর কারাদণ্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চে।
২০১৩ সালের ঘটনা। আদালত জানিয়েছে, ওই বছরের ২৬ জুলাই ‘নির্যাতিতা’র মা পুলিশের কাছে নিয়ে যান তাঁর মেয়েকে। সেখানে এফআইআর করা হয়। সেই এফআইআর-এ ‘নির্যাতিতা’র বয়স লেখা হয়েছিল ১৫ বছর। কিন্তু ঘটনার সময় ‘নির্যাতিতা’ প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন না এমন প্রমাণ আদালতের কাছে নেই। এর আগে বিশেষ শুনানি আদালত অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিলেও এফআইআর-এ নথিবদ্ধ ধর্ষিতার বয়স নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল। তারই প্রেক্ষিতে বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চে শাস্তি মকুবের আর্জি জানিয়েছিল অভিযুক্ত।
এফআইআর-এ অভিযোগকারিণী জানান, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাটা ঘটেছিল। ওই সময় তাঁর মা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। দাদা মেঝেতে ঘুমোচ্ছিলেন। সেই সময়েই প্রতিবেশী সুরজ মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে তাঁর মুখ চেপে ধরে। নিজের জামাকাপড় খুলে, তাঁর জামাকাপড়ও খুলে দেয়। তার পর তাঁকে ধর্ষণ করে তাঁর জামাকাপড়গুলি নিয়ে চলে যায়। মা বাড়িতে ফিরে আসার পর ‘নির্যাতিতা’ তাঁকে গোটা ঘটনা জানান। তার পর মা তাঁকে পুলিশের কাছে নিয়ে যান।
বিচারপতি গানেদিওয়ালা বলেছেন, ‘‘অভিযোগকারিণীর এই বয়ান বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি ঘটনার সময় প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন না, এমন কোনও প্রমাণ আদালতে দাখিল করা হয়নি। তাই এই ঘটনা দু’জনের সম্মতিতেই ঘটেছিল, এমনটা না ভাবার কোনও কারণ নেই।’’
‘‘মা না নিয়ে গেলে পুলিশে অভিযোগ করতাম না’’, অভিযোগকারিণীর এই বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গানেদিওয়ালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy