Advertisement
E-Paper

মধ্যমেধার বাজেট পেশ করলেন জেটলি

ভাবলে হাসি পায়, দেখলাম, শুনলামও বটে যে, এ বারের বাজেট বক্তৃতার বেশ কিছুটা অংশ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পড়লেন হিন্দিতেই। অর্থাৎ, হিন্দি বলয়ের গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছনোর আরও একটি মরিয়া প্রচেষ্টা!

দীপঙ্কর দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:৪১
চিকিৎসার এই বিপুল পরিকাঠামো আমাদের দেশে আছে তো? কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না।

চিকিৎসার এই বিপুল পরিকাঠামো আমাদের দেশে আছে তো? কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না।

শুধু জনমোহিনীই নয়, আমি এই বাজেটকে এককথায় বলব, নির্বাচনমুখী বাজেট। ‘ইন্ডিয়া’ নয়, ‘ভারত’-এর দিকে তাকিয়ে এই বাজেট পেশ করলেন অরুণ জেটলি। কারণ, মাত্র কয়েক দিন আগেই নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের নিজের রাজ্য গুজরাতের গ্রামাঞ্চল তাঁদের কার্যত ‘সবক’ শিখিয়ে ছেড়েছে। এ ছাড়াও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন।

ভাবলে হাসি পায়, দেখলাম, শুনলামও বটে যে, এ বারের বাজেট বক্তৃতার বেশ কিছুটা অংশ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পড়লেন হিন্দিতেই। অর্থাৎ, হিন্দি বলয়ের গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছনোর আরও একটি মরিয়া প্রচেষ্টা! জেটলি ঘোষণা করেছেন, জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার আওতায় দেশের ১০ কোটি পরিবার বা প্রায় ৫০ কোটি মানুষকে আনা হবে। তাঁদের জন্য হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয়বাবদ পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করা হবে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, চিকিৎসার এই বিপুল পরিকাঠামো আমাদের দেশে আছে তো? চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এই মানুষগুলো পাবেন তো?

এর পাশাপাশি, শিক্ষাখাতেও কিছু ঘোষণা হল। শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রী ভর্তি করলেই তো হবে না, শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়নও করতে হবে। সে জন্য ১৩ লক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করার কথা শোনা গেল। এবং তাঁদের যাতে শিক্ষাদানে সুবিধা হয় সে জন্য ব্ল্যাকবোর্ডের বদলে ডিজিটাল বোর্ডের ব্যবহার বাড়ানোর দিকে আমরা এগোব। একইসঙ্গে ঘোষণা করা হচ্ছে, অর্থনীতির বৃদ্ধির হার সাময়িক ভাবে একটু কমে গেলেও খুব শীঘ্রই তা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাবে। যে জিনিসটি চোখে পড়ে তা হল, অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, অর্থনীতির মূল বৃদ্ধি হয়েছে পরিষেবা ক্ষেত্রে, বিশেষত তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে। শুধু এ দেশেই নয়, গোটা বিশ্বেই এখন শ্রমনিবিড় প্রযুক্তির ব্যবহার কমে আসছে। ফলে, এই বিপুল পরিমাণ কর্মপ্রত্যাশীকে ঠিক কোন স্তরের শিক্ষাদান করলে ওই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা যাবে তার কোনও দিশা জেটলি দেখাতে পারেননি।

আরও পড়ুন
ভাড়া দেব, নিরাপত্তা দাও, পরিচ্ছন্নতা দাও

স্বাস্থ্য-শিক্ষা-কর্মসংস্থানের জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ করলেই কিন্তু সব শেষ হয়ে যায় না। তা যথাযথ রূপায়ণের জন্য প্রয়োজন আরও অনেক কিছুই। তার একটা জলজ্যান্ত প্রমাণ হচ্ছে, বৃহস্পতিবার জেটলি তাঁর বাজেট বক্তৃতার অনেকটা অংশ হিন্দিতে পড়তে বাধ্য হলেন। সেটা কি এই জন্য যে ইংরেজি শিক্ষাটা গ্রাম ভারতে এখনও সে ভাবে প্রসারিত হয়নি? অথচ, আমরা বলছি যে খুব দ্রুত ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে এগোব আমরা।

স্বাস্থ্য-শিক্ষা-কর্মসংস্থানের জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ করলেই কিন্তু সব শেষ হয়ে যায় না। কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না।

এই বাজেটে আয়করের দিক থেকে বেতনভুকদের কোনও বাড়তি সুরাহা মেলেনি। তবে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য কিছুটা কর ছাড়ের ব্যবস্থা করেছেন জেটলি। সেটা যদি বাস্তবে কার্যকরী হয় সে ক্ষেত্রে তুলনায় কিছু বেশি কর্মসংস্থানের আশা আছে। এই বাজেট নিয়ে এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলার নেই। কারণ, এই বাজেট নিতান্তই মধ্যমেধার।

Union Budget Central Budget Budget 2018 Budget 2018-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy