Advertisement
০২ মে ২০২৪

কল্যাণে কামধেনু, গো-শরণে মোদী

কামধেনু যোজনাকে স্বাগত জানিয়েও আরএসএস-এর গৌ-সেবা প্রমুখ অজিত মহাপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকারকে ঘোষণা করতে হবে— যাবতীয় কল্যাণ ও উন্নয়নের কর্মসূচিতে কেবলমাত্র ‘দেশি ও খাঁটি ভারতীয়’ গরুদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

গোসম্পদের মানোন্নয়ন কী ভাবে হবে, কী ভাবে গরুর দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়বে, তারও হদিস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

গোসম্পদের মানোন্নয়ন কী ভাবে হবে, কী ভাবে গরুর দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়বে, তারও হদিস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

গরুর কল্যাণে কামধেনু যোজনায় ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল মোদী সরকার। অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল শুক্রবার বাজেট বক্তৃতায় জানান, রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনের অধীনে এই প্রকল্পে দেশে রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ তৈরি হবে। এই আয়োগ শুধু গোসম্পদের মানোন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়টিই দেখবে না, গরুর কল্যাণ ও রক্ষায় আইন সঠিক ভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারিও করবে। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, আয়োগের নামে নরেন্দ্র মোদী কি এ বার সরকারি গোরক্ষক বাহিনী তৈরিতে নামছেন? কামধেনু যোজনাকে স্বাগত জানিয়েও আরএসএস-এর গৌ-সেবা প্রমুখ অজিত মহাপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকারকে ঘোষণা করতে হবে— যাবতীয় কল্যাণ ও উন্নয়নের কর্মসূচিতে কেবলমাত্র ‘দেশি ও খাঁটি ভারতীয়’ গরুদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

গোসম্পদের মানোন্নয়ন কী ভাবে হবে, কী ভাবে গরুর দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়বে, তারও হদিস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। জানান, এর জন্য সুপ্রজননবিদ্যা (জেনেটিকস) ও সংকরায়ণ পদ্ধতিকে কাজে লাগানো হবে। এ বিষয়ে দিশা দেবে রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগই।

আরএসএস ‘গোমাতা’-র সেবা ও রক্ষার কর্মসূচি নিয়ে এগোনোর পরেই মোদী সরকার বাজেটে এই কামধেনু যোজনা নিয়ে এল। বক্তৃতায় কৃষকদের জন্য প্রকল্পের ঘোষণার পরেই গরুর কল্যাণে এই কামধেনু হওয়ার ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী। সঙ্ঘের গৌ-সেবা প্রমুখ মহাপাত্রের দাবি— দেশের প্রতি গ্রামে অন্তত পাঁচ শতাংশ বাড়িতে গোপালন বাধ্যতামূলক করতে হবে। আর সেই গরু হতে হবে দেশি ও খাঁটি ভারতীয়। তাঁর কথায়, ‘‘এর ফলে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি মজবুত হবে। কৃষকদের আর আত্মঘাতী হতে হবে না। তবে শুধু দুধ নয়, সঙ্ঘের ভাবনা অনুযায়ী যে পাঁচটি ‘সম্পদ’ গোমাতা দান করেন— দুধ, দই, ঘি, গোমূত্র ও গোবর, সবেরই সঠিক ব্যবহার শেখাতে হবে গোপালকদের।’’ সঙ্ঘ-নেতার দাবি, কেবল তাতেই গরু ও গোপালকের শ্রীবৃদ্ধি সম্ভব। গত মার্চ থেকে সঙ্ঘের গৌ-সেবা শাখা দেশ জুড়ে বিশেষ প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। মঠ ও মন্দিরে গিয়ে তারা গোশালা স্থাপনে উৎসাহ দিচ্ছে। মহাপাত্রের দাবি, সরকারের উচিত এই বিষয়টিও আয়োগের কর্মসূচির আওতায় আনা। সমস্ত মন্দির ও মঠে যাতে খাঁটি ভারতীয় ও দেশি গরুর পণ্য ব্যবহৃত হয়, সেটাও নিশ্চিত করা উচিত।

সরকার কসাইখানা বন্ধ করে দেওয়ায় কৃষকেরা বুড়ো ও উৎপাদনে অক্ষম গরুর পাল নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। গরু বিক্রি লাটে উঠেছে গোরক্ষকদের চোখরাঙানিতে। এই পরিস্থিতিতে কামধেনু যোজনায় উল্টো বিপত্তি হতে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের। ভোটের মুখে গরুর শরণ সুখকর হয়নি মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের বিজেপির সরকারের। দুই রাজ্য সরকারই বিধানসভা ভোটের মুখে পৃথক গোকল্যাণ মন্ত্রক গঠন করে হিন্দুত্বের ধ্বজা উড়িয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE