জনগণের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে ‘জনগণের সেবকদের’! দেশের ক্যাবিনেট সচিবের একটি পত্র-বার্তা ঘিরে এই চর্চাই জমাট বেঁধেছে প্রশাসনের অন্দরে। কারণ, সম্প্রতি একটি চিঠিতে সিনিয়র আমলা-আধিকারিকদের উদ্দেশে ক্যাবিনেট সচিব টি ভি সোমনাথনের বার্তা— কথা বলতে হবে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গে। তবেই ধরা যাবে সরকারের ভুল-ত্রুটি এবং করা যাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। কারণ, প্রশাসন পরিচালিত হয় সাধারণের জন্যই।
চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, এমন অনেক অভিযোগ তাঁর কাছে এসেছে, যেখানে সরকারের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন কারও সঙ্গে দেখা করতে অনীহা রয়েছে অনেক সচিব এবং সিনিয়র আধিকারিকের। অথচ সাক্ষাৎপ্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কাজকর্ম নিয়েই কথা বলতে আগ্রহী থাকেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। সোমনাথনের বক্তব্য, সরকারের কাজ উপভোক্তা এবং মানুষকে সরাসরি প্রভাবিত করে। ফলে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের সঙ্গে কথা বললে সরকারি পদক্ষেপগুলির প্রকৃত গুণমান বোঝা সম্ভব। তবে ক্যাবিনেট সচিব এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ক্লাব-হোটেলে নয়, বরং এমন বৈঠক হতে হবে সরকারি দফতরেই। সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন অনুভূত হলে সেই বৈঠকে অন্য কোনও আধিকারিককেও রাখা যেতে পারে।
প্রাথমিক ভাবে এই বার্তা কেন্দ্রীয় সরকারের সচিব-আধিকারিকদের উদ্দেশে হলেও, প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যভিত্তিক সব সচিব-আধিকারিকদের ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য হওয়া উচিত। কারণ, আইএএস-দের সকলেই সর্বভারতীয় স্তরের আধিকারিক। এ রাজ্য প্রশাসনের প্রবীণ আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, খাতায়কলমে আমলারা জনগণের সেবক (পাবলিক সার্ভেন্ট)। কিন্তু যত দিন এগিয়েছে, তত সাধারণের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে এমন আধিকারিকদের একটা বড় অংশের। বাতি লাগানো ঘন কালো কাচে ঢাকা গাড়ি, ট্রাফিক সিগনাল বা গতির সীমা এড়িয়ে যাতায়াত, সাধারণ মানুষ চেয়েও তাঁদের সাক্ষাৎ না পাওয়া ইত্যাদি এই দূরত্ব বাড়িয়ে তুলেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)