টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন মামলায় মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে লোকপালের কাছে রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। তৃণমূল সাংসদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানিকে নিয়েও বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়েছে সোমবার।
মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ নিয়ে গত বছর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় লোকপাল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে বরখাস্ত করা হয় তৃণমূল সাংসদকে। মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করা হয় লোকপালের নির্দেশিকায়। গত বছরের ২১ মার্চ মহুয়া এবং দর্শনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। লোকপালের নির্দেশ মাফিক দুর্নীতি দমন আইনে মামলা হয় মহুয়ার বিরুদ্ধে।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শনের কাছ থেকে তিনি নগদ টাকা এবং উপহার নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন। নিশানা করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। সবটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য। এই অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবি তোলেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তার আগে মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয়অনন্ত দেহাদ্রাই নানা অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।
পরে দর্শন নিজেই হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগ ইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন পোস্ট করতেন তিনি। তবে ঘুষের অভিযোগ মানেননি। নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ মানেননি মহুয়াও। যদিও মহুয়ার সাফাই না শুনেই লোকসভার এথিক্স কমিটি তাঁকে একতরফা ভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল। গত ৮ বছরের ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত লোকসভায় পাশও হয়ে যায়। ঘটনাক্রমে মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় লোকপাল। যদিও সে বছরই লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে পুনর্নির্বাচিত হন মহুয়া। বিজেপির অমৃতা রায়কে ৫৬ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডে সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন মহুয়া। সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে লোকসভার সচিবালয়। সুপ্রিম কোর্টের নোটিসের জবাবে লোকসভার সচিবালয় জানিয়ে দেয়, সংবিধানের ১২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনসভার অভ্যন্তরীণ কার্যপদ্ধতিতে বিচারবিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।