Advertisement
E-Paper

সিবিআই যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে, ‘কঠিন’ পরিস্থিতিতেই আজ অধিকর্তা পদে শুক্ল

ক্ষুব্ধ সিবিআই কর্তারা ঠিক করেছেন, কাল শুক্ল দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সংস্থার আধিকারিকদের হেনস্থার কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

কলকাতায় সিবিআই ও রাজ্য প্রশাসনের চূড়ান্ত টানাপড়েনের মধ্যেই আজ রাতে দিল্লি পৌঁছলেন সিবিআইয়ের পরবর্তী অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্ল। কাল দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি। যেতে পারেন কলকাতাতেও।

ক্ষুব্ধ সিবিআই কর্তারা ঠিক করেছেন, কাল শুক্ল দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সংস্থার আধিকারিকদের হেনস্থার কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা। সিবিআই সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতকে আগামী কাল সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জানানো হবে, তাদের নির্দেশেই সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তদন্তে ‘চূড়ান্ত অসহযোগিতা’ করার পাশাপাশি তাদের অফিসারদের ‘আটক’ করে। বিনা অনুমতিতে যে কোনও রাজ্যে প্রবেশের যে অধিকার সিবিআইয়ের থাকে, তা আগেই প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। সিবিআইয়ের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা জানাবেন— সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই রাজ্যে তদন্ত করলে সেই নিষেধাজ্ঞার মূল্য থাকে না। তা ছাড়া, নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই এই তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সিবিআই প্রধান নাগেশ্বর রাও আজ বলেন, ‘‘রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে তদন্তে বাধা দিয়েছেন তিনি। রাজ্য প্রশাসন সমস্ত প্রমাণ নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছে। তদন্তে সাহায্য তো করছেই না, বহু প্রমাণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, কলকাতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীদের পরামর্শ মেনে পদক্ষেপ করবেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: বৈঠকে এক দিন দেরি নিয়ে প্রশ্ন রীনা মিত্রের

২০১৭ সালে অলোক বর্মাকে লেখা রাজীব কুমারের সেই চিঠি। সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

কেন্দ্রের একটি সূত্র বলছে, রাত পর্যন্ত সিবিআই অফিসারদের ছাড়া না হলে আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে অভিযান চালানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্নায় বসার পরেই শেক্সপিয়র সরণি থানা থেকে সিবিআই অফিসারদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

তবে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের উদ্বেগ ও কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়টি জানাতে চায় সিবিআই। এ জন্য রাজ্যপালের সময় চাওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্র জানিয়েছে, আটক সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে অপরাধীর মতো ব্যবহার করেছে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ আনা হয়েছে। উল্টো দিকে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের দাবি, সিবিআই আধিকারিকদের কাছে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না। পাল্টা যুক্তিতে সিবিআই দাবি করেছে, রাজীব কুমারকে এর আগে একাধিক বার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এক বারও তিনি সিবিআইয়ের কাছে আসেননি। তাই এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই রাজীব কুমারের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাঁদের সঙ্গেই ছিল।

সূত্রের খবর, রাজনৈতিক কারণে সারদা মামলায় তাঁকে হেনস্থা করার অভিযোগ করে গত অক্টোবরেই তৎকালীন সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজীব কুমার। তাঁর অভিযোগের আঙুল ছিল মোদী-ঘনিষ্ঠ রাকেশ আস্থানার দিকে। আস্থানার সঙ্গে বর্মার সংঘাত থাকায় আস্থানা শিবির অভিযোগ তোলে, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে মামলা লঘু করে দিয়েছে বর্মা শিবির। আজ অন্তর্বর্তী সিবিআই প্রধান হিসেবে নাগেশ্বর রাওয়ের শেষ দিন। তৃণমূলের অভিযোগ, সে কারণেই তড়িঘড়ি রবিবার ওই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন শাসক-ঘনিষ্ঠ নাগেশ্বর।

রাতে কলকাতার নিজাম প্যালেসে অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তব। এত দিন ধরে ঠিক কোন কোন তারিখে কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে, তার আগে কবে রাজ্য প্রশাসনকে এ নিয়ে বলা হয়েছে, কবে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দিয়ে রাজীব কুমারকে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে, সে সমস্ত নথিপত্র এ দিন এক জায়গায় করে রাতেই দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। সিবিআইয়ের যুক্তি, এ দিন আচমকাই যে রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি, তার প্রমাণ হিসাবে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই সব নথি পেশ করা হতে পারে।

CBI Supreme Court Rajib Kumar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy