প্রতিমা এসে পৌঁছেছে হায়দরাবাদের মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র
বিরিয়ানি, মুক্তো আর নিজ়ামের শহর হায়দরাবাদের সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক কম দিনের নয়। বিভিন্ন সময়ে জীবিকার তাগিদে বাঙালি এসে এই শহরকে আপন করে নিয়েছেন। এই শহরে এখন প্রায় দেড় লক্ষ বাঙালির বাস। আর সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি আর দুর্গাপুজো। বর্তমানে চল্লিশটির বেশি পুজো হয় হায়দরাবাদে। এর মধ্যে প্রাচীনতম ‘হায়দরাবাদ বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন’। এ বছর এই পুজো ৮১ বছরে পড়ল। সাবেক একচালা প্রতিমা আসে কুমোরটুলি থেকে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য পুজোগুলি হল ‘বঙ্গীয় সংস্কৃতি সঙ্ঘ’, ‘সেকেন্দ্রাবাদ কালীবাড়ি’, ‘সৈনিকপুরী কালীবাড়ি’।
হায়দরাবাদে দুর্গাপুজোর তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন ‘প্রবাসী অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুজো। এটি শুরু হয় ২০১৯ সালে নিজ়ামপেট এলাকায়। তবে, শুধু নিজ়ামপেটেরই নয়, হায়দরাবাদের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাঙালিরা যোগ দেন এই পুজোয়। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল পুজোর ভোগপ্রসাদ। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী, এই তিন দিন ভোগের আয়োজন করা হয় ৭০০ থেকে ৮০০ দর্শনার্থীর জন্য। শুধু খিচুড়ি-লাবড়া নয়, ভোগের প্রসাদে থাকে পোলাও, পনির, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি। সন্ধে হতেই শুরু হয়ে যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ, গান, কবিতা, নাটক, আরও অনেক কিছু থাকে সকলের মনোরঞ্জনের জন্য। আর পুজোয় বাঙালি খাবারের স্টল থাকবে না, তা কি হতে পারে? এগ রোল, ফিশ ফ্রাই, বিরিয়ানি, মিষ্টি- সহ নানা খাবারের স্টল থাকে।
‘বাংলার বাইরে বাঙালিয়ানা’— এই হল প্রবাসী অ্যাসোসিয়েশনের মন্ত্র। দুর্গাপুজোর মধ্যে দিয়ে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবকে বাংলার বাইরে সবার সামনে তুলে ধরাও তার অন্যতম উদ্দেশ্য।
পুজোর চারটে দিন মানুষ এই পুজোয় এসে ভুলে যান যে, তাঁরা কলকাতা থেকে ১৫০০ কিলোমিটার দূরে হায়দরাবাদে বসে ঠিক একই রকম আনন্দ পাচ্ছেন, যতটা বাংলায় থাকলে পেতেন। এর চেয়ে বড় সাফল্য আর কী-ই বা হতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy