দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশলগত কূটনীতিতে নয়াদিল্লিকে কোণঠাসা করতে চিন-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি হওয়া ত্রিমুখী অক্ষের বিষয়টি ইতিমধ্যেই চর্চিত। পাল্টা সূত্র খুঁজছে সাউথ ব্লক। এই আবহে বৃহস্পতিবার কুয়ালা লামপুরে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বৈঠক করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হুসেনের সঙ্গে। কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
এই বৈঠকের পরে ওয়াং ই জানিয়েছেন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস চিন এবং বাংলাদেশের মধ্যে ‘গভীরতর বোঝাপড়ার’ প্রত্যয়ে পৌঁছে গিয়েছেন। দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিকে সামনে রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। চিনা বিদেশমন্ত্রীর কথায়, বেজিং এবং ঢাকার মধ্যে সহযোগিতা দু’দেশকেই উপকৃত করবে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সমস্ত পণ্যে একশো শতাংশ শুল্ক ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে শি জিনপিং সরকার। পাশাপাশি এটা মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে আমেরিকার ট্রাম্প সরকার।
সূত্রের দাবি, ওয়াং ই-র বক্তব্য, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভবিষ্যতের সুযোগসুবিধা ভাগ করে নেওয়ার প্রশ্নে চিন একটি সম্প্রদায় গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম প্রতিবেশী হিসেবে চিন বাংলাদেশ এবং অঞ্চলের অন্য দেশগুলির সঙ্গে কাজ করতে বদ্ধপরিকর যাতে এশিয়ার সামগ্রিক আধুনিকীকরণ ঘটে। ওয়াংয়ের বক্তব্য, কুনমিং-এ সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর পর্যায়ের বৈঠক সফল হয়েছে। তা যেন আরও ফলমুখী হয়ে ওঠে তার জন্য সক্রিয় থাকবে চিন এমনটা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।
পাশাপাশি তৌহিদের কথায়, ‘চিন বাংলাদেশের এমন বন্ধু, যার উপর ভরসা করা যায়। চিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়া নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে।’ তিনি বৈঠকে চিনকে ধন্যবাদ দেন দীর্ঘমেয়াদি ভাবে ঢাকার পাশে থাকার জন্য। বাংলাদেশ যে ‘এক-চিন নীতিতে’ আস্থাবান সে কথা বলে তৌহিদ জানিয়েছেন, বেজিংয়ের সঙ্গে অর্থনীতি, বাণিজ্য, চিকিৎসা, আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রগুলিকে জোরালো করতে চায় ঢাকা। পাশাপাশি, রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের বিষয়েও চিনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চায়। প্রসঙ্গত, চলতি বছরে বাংলাদেশ-চিনের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর হল। ওয়াং ই জানিয়েছেন, যাতে মসৃণ ভাবে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হয়ে যায় সে জন্য চিনসহায়তা করবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)