তথ্যে অসঙ্গতির কারণে কোনও বিদেশি যদি ভারতে প্রবেশে অভিবাসন দফতরের ছাড়পত্র না পান, সেই বিদেশিকে তাঁর নিজের দেশে ফেরানোয় ভারতের কোনও দায় থাকবে না। তিনি যে যান-সংস্থার মাধ্যমে (বিমান, জাহাজ, সড়ক-রেল) ভারতে এসেছিলেন, সেই সংস্থা ওই বিদেশিকে তাঁর দেশে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ থাকবে। চলতি বাজেট অধিবেশনে আনতে চলা অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক বিলে এই শর্ত রাখতে চলেছে সরকার।
সূত্রের মতে, সংসদে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে ওই বিলটি পেশ করার কথা ভেবে রেখেছে সরকার। যদিও বিরোধীদের মতে, ওই বিল আনার মূল লক্ষ্য হল, বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিমদের নিশানা করে আইনের দোহাই দিয়ে তাদের ধরপাকড় করা এবং বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ ভোটের আগে পূর্ব ভারত জুড়ে হিন্দু মেরুকরণের হাওয়া তোলা।
সরকারি সূত্রের মতে, এ দেশে বৈধ ভাবে পড়তে এসে, চিকিৎসা করাতে এসে কিংবা বেড়াতে এসে অনেক বিদেশি থেকে যান। এ সব রুখতে নতুন বিলে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, বাড়ির মালিকদের তাঁদের সংস্পর্শে আসা বিদেশির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য (বিশেষ করে ভিসার মেয়াদ) প্রশাসনকে নিয়মিত জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। অন্যথায় ওই প্রতিষ্ঠান বা বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন বিলে বলা হয়েছে, যদি অভিবাসন দফতর কোনও বিদেশিকে ভারতে প্রবেশ করতে না দেয়, তাঁকে তাঁর দেশে ফেরানোর দায়িত্বে থাকবে সংশ্লিষ্ট যান (বিমান, জাহাজ, রেল বা বাস) সংস্থা। নতুন বিল অনুয়াযী ভবিষ্যতে কোনও বিদেশির কাছে এ দেশে প্রবেশের বৈধ কাগজ রয়েছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট যান সংস্থার। বিলে বলা হয়েছে, যদি কেউ বৈধ কাগজ ছাড়া প্রবেশের চেষ্টা করেন, ধরা পড়লে ২-৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ না মিললে তাঁকে বহন করে আনা সংস্থার বিমান, জাহাজ বা বাস আটক করা হবে। ভুয়ো পাসপোর্ট দেখিয়ে ভারতে প্রবেশ বা ভারত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময়ে ধরা পড়লে ন্যূনতম ২ থেকে ৭ বছর জেল এবং ১-১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)