E-Paper

সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত যেতে এ বার তৈরি হবে রোপওয়ে, ছাড়পত্র মন্ত্রিসভার

হেঁটে যেতে না পারলে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম কেদারনাথে পৌঁছনোর একমাত্র উপায় হেলিকপ্টার। রোপওয়ে তৈরি হলে বয়স্করাও সহজে ১১,৯৬৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথে সহজেই যেতে পারবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ০৮:৪০
কেদারনাথ।

কেদারনাথ। —ফাইল চিত্র।

এখন কেদারনাথ যেতে হলে, সোনপ্রয়াগ থেকে গৌরীকুণ্ড পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা গাড়িতে গিয়ে তার পরে গৌরীকুণ্ড থেকে ১৬ কিলোমিটার পাহাড়ি পথে ট্রেকিং করে কেদারনাথ পৌঁছতে হয়। আজ কেন্দ্রীয় সরকার সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ১২.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে তৈরির সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দিল। প্রায় ৪,০৮১ কোটি টাকা খরচে তৈরি এই রোপওয়ে আগামী চার থেকে ছয় বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ড সফরে যাচ্ছেন। তার আগে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথের পাশাপাশি গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুণ্ড সাহিব পর্যন্ত ১২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে তৈরির সিদ্ধান্তেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিলমোহর দিয়েছে। এই প্রকল্পে খরচ হবে ২,৭৩০ কোটি টাকা। হেমকুণ্ড সাহিবে শিখদের দশম গুরু গোবিন্দ সিংহ ধ্যান করেছিলেন বলে শিখদের বিশ্বাস। রামায়ণের কাহিনী অনুযায়ী, লক্ষ্মণও ওই জায়গায় ধ্যান করেছিলেন। মোদী সরকারের দাবি, এখন কেদারনাথ পৌঁছতে হলে গৌরীকুণ্ড থেকে পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চেপে বা পালকিতে চেপে যে রাস্তা পার হতে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা সময় লাগে, তা রোপওয়ের মাধ্যমে মাত্র ৩৬ মিনিটেই হয়ে যাবে।

এখন পায়ে হেঁটে যেতে না পারলে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম কেদারনাথে পৌঁছনোর একমাত্র উপায় হেলিকপ্টার। রোপওয়ে তৈরি হলে বয়স্করাও সহজে ১১,৯৬৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথে সহজেই যেতে পারবেন। ২০২৩-এ মোট ২৩ লক্ষ তীর্থযাত্রী কেদারনাথে গিয়েছিলেন। রোপওয়ে তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে প্রতি মরসুমে ৩৬ লক্ষ তীর্থযাত্রী কেদারনাথে যাবেন বলে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের বক্তব্য। তবে রোপওয়েতে গেলে এখনকার তুলনায় খরচ কমবে কি না, তা নিয়ে অশ্বিনী কোনও
আশ্বাস দিতে চাননি। তাঁর যুক্তি, এখন কত খরচ হচ্ছে, তার উপরে রোপওয়েতে যাওয়ার খরচ কম হবে কি না, তা নির্ভর করছে। রোপওয়ে তৈরি হবে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে। কেন্দ্রীয় সরকারকে কত টাকা দিতে হবে, তা বেসরকারি সংস্থা বাছাই করে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই ঠিক হবে। তার উপরেও রোপওয়েতে যাতায়াতের খরচ নির্ভর করবে।

কেদারনাথের পরিবেশ ও আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে অত্যাধুনিক ‘ট্রাই-কেবল ডিট্যাচেবল গন্ডোলা’ প্রযুক্তিতে রোপওয়ে তৈরি হবে। যাতে এক দিকে প্রতি ঘণ্টায় ১,৮০০ জন যেতে পারবেন। দিনে মোট ১৮ হাজার যাত্রী রোপওয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। অশ্বিনীর দাবি, বেশি তীর্থযাত্রী গেলে উত্তরাখণ্ডের পর্যটন, অর্থনীতিতে উন্নতি হবে। তবে পরিবেশে যাতে তার প্রভাব না পড়ে, সে দিকে খেয়াল রেখে প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি হয়েছে।

হেমকুণ্ড সাহিব পৌঁছতে হলে এখন হৃষীকেশ থেকে সড়কপথে গোবিন্দঘাট পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেক করে যেতে হয়। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই তীর্থস্থান বছরে পাঁচ মাস খোলা থাকে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত, গোবিন্দঘাট থেকে ঘাঙ্ঘরিয়া হয়ে রোপওয়ে হেমকুণ্ড সাহিবে পৌঁছবে। ঘাঙ্ঘরিয়ায় নেমে ইউনেস্কো-র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
সাইট’ ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সও সহজে পৌঁছনো যাবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kedarnath

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy