ছবি: সংগৃহীত।
একই অঙ্গে দুই রূপ। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দু’রকম অবস্থান নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আধার সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে মোদী সরকার বলছে, গোপনীয়তার অধিকার সংবিধানের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সেই মোদীর সরকারই এবার হোয়াটসঅ্যাপ-এর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছে, নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য তাঁর মৌলিক অধিকারের অন্তর্গত। সেই তথ্য ফাঁসের অর্থ সংবিধানের ২১ তম অনুচ্ছেদে জীবনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা। এমনকী সরকারের তরফে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কিছু নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র।
২০১৬-য় ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ-এর তথ্য আদানপ্রদানের চুক্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে কর্মণ্য সিংহ সারিন ও শ্রেয়া শেট্টি নামে দুই ছাত্রছাত্রী। তাঁদের যুক্তি, এই চুক্তির জেরে হোয়াটসঅ্যাপ-এ পাঠানো যে কোনও বার্তা বা ছবি ফেসবুকের আয়ত্তে চলে আসবে। হোয়াটসঅ্যাপ-এ দেওয়া সাধারণ মানুষের তথ্য ওই সংস্থা অন্য কাউকে দিতে পারে না। এটি গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে তাঁদের অভিযোগ। বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে এর শুনানি শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনার এত কম গোলাবারুদ? ক্যাগ রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগ
শুক্রবার কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পি এস নরসিংহন যুক্তি দেন, ‘‘আমার ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য আমার জীবন, আমার সম্মানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।’’ হোয়াটসঅ্যাপ-এর আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দিয়েছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপ-এ যে কোনও বার্তা ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ করা থাকে। অর্থাৎ, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বার্তাটিকে কোডে পরিণত করে ফেলা হয়। ফলে কোনও তৃতীয় পক্ষ সেখানে নজরদারি করতে পারে না। কিন্তু নরসিংহন বলেন, ‘‘কোনও চুক্তি যদি সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করে, তা হলে সেখানে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে।’’
কেন্দ্রের এই অবস্থান আধার সংক্রান্ত মামলায় নেওয়া অবস্থানের একেবারে বিপরীত। আধারের ফলে গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে অভিযোগেও সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। তা ঠিক করার আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের বেঞ্চে এখন গোপনীয়তার অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কি না, তার ফয়সালা করতে হচ্ছে। সেখানে কেন্দ্র আগেই অবস্থান নিয়েছে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কোনও সংবিধানের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এ’টি সাধারণ আইনি অধিকার। যেখানে রাষ্ট্র চাইলে হস্তক্ষেপ করতেই পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল মঙ্গলবার বিস্তৃত সওয়াল করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy