সিলেক্ট কমিটিতে যাওয়া এড়াতে বিমা বিল নিয়ে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠক শুরু করল মোদী সরকার। উদ্দেশ্য সর্বদল বৈঠকের আগেই কোনও সমাধানসূত্র খুঁজে বার করা।
রাজ্যসভায় আটকে গেলেও সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে বিলটি পাশ করাতে পারে সরকার। কিন্তু তার জন্য লোকসভায় বিলটি পাশ করানো জরুরি। আসন সংখ্যার বিচারে এ কাজ সরকার অনায়াসেই পারবে। সে জন্যই কংগ্রেস চাইছে বিমা বিল রাজ্যসভায় পেশ হওয়া মাত্র ভোটাভুটি করে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠিয়ে দিতে। এই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া রয়েছে। চেয়ারম্যান তা নিয়ে ভোটাভুটি করলেই সরকার পরাস্ত হবে এবং বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে চলে যাবে। ঠিক হয়েছে, বিল নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা শুরু করতে চাইলেই কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিরোধী পক্ষ সেটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলবে। আর সেটা এড়াতেই সরকার এখন বিরোধীদের সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করেছে।
বিজেপি সূত্রের মতে, লোকসভার বিরোধী দলনেতা পদ না পাওয়ায় রাজ্যসভায় ছায়াযুদ্ধ করছে কংগ্রেস। পাশাপাশি ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ মামলা থেকে নিষ্কৃতি চান সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। বিল পাশের জন্য সেই বিষয়গুলি নিয়েও এখন তলে তলে আলোচনা শুরু হয়েছে। কথা চলছে সমাজবাদী, বহুজন সমাজবাদী পার্টির সঙ্গেও। তারা আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছে। কিন্তু বিল নিয়ে বিরোধীদের আপত্তিগুলি সরকার মেনে নিলে যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এই দলগুলির সাহায্য মেলে, কথা হচ্ছে তা নিয়েও। আবার জয়ললিতার দল ডেপুটি স্পিকারের পদ চায়। সেই সিদ্ধান্তও দ্রুত নিয়ে ফেলতে চাইছে সরকার। একই সঙ্গে সংসদের বিভিন্ন কমিটিও বিভিন্ন দলের মধ্যে বণ্টন করে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার পক্ষ।
ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা দাবি করেন, বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর বিষয়ে আজ সপা, বসপা এবং এডিএমকে নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, সপা, বসপা, কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বামেদের ঐক্য অটুট থাকলে রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে পারবে না সরকার।
বিমা বিল নিয়ে জট কাটাতে গত কাল কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আজও আনন্দ শর্মা ও গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে বৈঠক হয় সরকারের। পরে জেটলি বলেন, “কংগ্রেসের হাবভাবে স্পষ্ট, যে ভাবে হোক ওরা বিলটি ঝুলিয়ে রাখতে চায়। দ্বিচারিতা করছে কংগ্রেস।” জেটলি-র এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে রাহুল গাঁধী বলেন, “কংগ্রেস কোনও দ্বিচারিতা করছে না, করছে ওরা।” কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, বিমা বিলে যে নতুন ১১টি সংশোধন আনতে চাইছে সরকার, তার দু’টি নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁদের। আনন্দ শর্মা বলেন, “এ ব্যাপারে সিলেক্ট কমিটিতে আলোচনার দাবিতে অনড় কংগ্রেস। বিজেপির বাধায় বিলটি পাশ করাতে ৬ বছর দেরি হয়েছে। আর দু’মাস দেরি হলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy