কাজি নজরুলের ছবির পাশেই ছিল মাদারের ছবি। ছবি: স্বপন রায়।
মাদার টেরেসার ছবি সরিয়ে নিজের অফিস-ঘরে নরেন্দ্র মোদীর ছবি সাজালেন শিলচরের নবনিযুক্ত পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর। তিনি জানালেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবিও সেখানে থাকবে।
একইসঙ্গে ওই ঘরের দেওয়াল থেকে খুলে নেওয়া হল মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে সাংসদ সুস্মিতা দেবের ছবি। পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকাকালীন ছবিগুলি টাঙিয়েছিলেন সুস্মিতাদেবীই।
দ্বিতীয় ছবিটি নিয়ে কেউ মন্তব্য না-করলেও, ভারতরত্ন মাদার টেরেসার ছবি সরানো নিয়ে শহরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সমালোচনায় সরব কংগ্রেস। জঞ্জাল সাফাই, জল কর কমানোর দাবিতে গত কালই তাঁরা নীহারেন্দ্রবাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শপথ গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যেই কাজের হিসেব চাইতে যাওয়ায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানান পুরপ্রধান।
মাদারের ছবি সরানোর খবর পেয়েই ব্যানার-পোস্টার নিয়ে পুরপ্রধানের অফিসে ঢুকে যান কংগ্রেস সদস্যরা। বিরোধী দলনেতা অলক কর, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন সহ-সভাপতি রঞ্জিত রায় প্রশ্ন তোলেন, কেন মাদার টেরেসার ছবি সরানো হল? নীহারবাবুর জবাব, তাঁর অফিসের দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, সুভাষচন্দ্র বসুর মতো দেশনায়কদের ছবি রয়েছে। সেখানে মাদার টেরেসার ছবি বেমানান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মাদারকে অশ্রদ্ধা করছি না। কিন্তু কৃষ্টি-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে রবীন্দ্র-নজরুলের যে অবদান, টেরেসা সে সারিতে অবস্থান করেন না।’’
কংগ্রেস, যুব কংগ্রেস, এনএসইউআই— কেউ অবশ্য তাঁর কথা মানতে নারাজ। তাঁরা দাবি তোলেন, পুরপ্রধানের ঘরে মাদারের ছবি রাখতেই হবে। হই-হট্টগোলের মধ্যেই নীহারবাবু বলেন, ‘‘আমি যত দিন এই চেয়ারে বসব, তত দিন কোনও মতেই ওই ছবি এখানে থাকবে না।’’ পুরসভার উপ-সভানেত্রী চামেলী পালও তাঁকে সমর্থন করেন।
কংগ্রেস নেতা অলক কর বলেন, ‘‘শিলচর পুরসভার ইতিহাসে এমন ঘটনা প্রথম ঘটল। এর আগে কোনও চেয়ারম্যান কারও ছবি সরানোর কথা ভাবেননি।’’ রঞ্জিতবাবুর আশঙ্কা, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যে নজরুলের ছবিও হয়তো সরিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে মোহন ভাগবতের ছবি বসানো হবে।’’
নীহারবাবু পরে বলেন, ‘‘মাদার টেরেসা নয়, সুস্মিতা দেবের ছবি সরানোতেই কংগ্রেস সদস্যরা ক্ষেপে গিয়েছেন। এখন টেরেসার ছবি সামনে রেখে রাজনীতি করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy