Advertisement
E-Paper

কঠিন সময়ের মুখে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র, বলছে ইনফোসিস-উইপ্রো

বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার আবর্তে এখন শিরে সংক্রান্তি দশা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের! নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে না পারলে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীরা তাঁদের চাকরি খোয়াতে পারেন যে কোনও সময়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ১৭:৩২

বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার আবর্তে এখন শিরে সংক্রান্তি দশা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের! নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে না পারলে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীরা তাঁদের চাকরি খোয়াতে পারেন যে কোনও সময়।

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের দুই অগ্রণী সংস্থা ‘ইনফোসিস’ ও ‘উইপ্রো’র তরফে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, উইপ্রো ও টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস)-এর শেয়ারের দামের হেরফের না ঘটলেও, মঙ্গলবারই ইনফোসিসের শেয়ারের দাম প্রায় দেড় শতাংশ পড়ে গিয়েছে। রীতিমতো উদ্বিগ্ন ইনফোসিসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) বিশাল সিক্কা ও উইপ্রোর আজিম প্রেমজি।

কর্মীদের প্রতি দেওয়া তাঁদের বর্ষশেষের লিখিত ভাষণে দেশের দুই অগ্রণী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার দুই শীর্ষ কর্তা বলেছেন, সামনের সে দিনটা বড়ই ভয়ঙ্কর তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষে। যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তি একটি বিশ্বায়িত শিল্প, তাই বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার ফলে গভীর সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। অন্য দেশে চাকরি করা ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদেরও ভবিষ্যত অন্ধকারে। রাজনৈতিক পালাবদলের ফলে সেই সব দেশে কর্মরত ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা চাকরি খোয়াতে পারেন যে কোনও সময়। আর যেহেতু ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি বিদেশের বাজারে তেমন লাভ করতে পারছে না, তাই সেই ভিন দেশে চাকরি খোয়ানো ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের দেশে ফিরে ভালো চাকরি খুঁজে নেওয়ার সম্ভাবনাও কমে গিয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। আর সেই সম্ভাবনা আগামী দিনে আরও কমতে চলেছে, দ্রুত হারে।

আরও পড়ুন- মহাপতন সুদ-হারে, ধারের চাহিদা বাড়বে কি

ইনফোসিসের সিইও বিশাল সিক্কা তাঁর লিখিত ভাষণে বলেছেন, ‘‘বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা যে ভাবে দ্রুত তালে বেড়ে চলেছে, তাতে কর্মীরা নতুন নতুন প্রযুক্তি, প্রকৌশল উদ্ভাবন করতে না পারলে খুব শিগগিরই পড়ে যাবেন গভীর সঙ্কটে। কারণ, তাঁদের চাকরি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় রকমের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হবে।’’

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আরও একটি অগ্রণী সংস্থা টিসিএস-এরও হাল প্রায় একই রকম। বিদেশে যাঁরা তাঁদের সঙ্গে ব্যবসা করেন, সেই শিল্পপতিরা ধীরে ধীরে হাত গুটিয়ে নেওয়ার ফলে বহু দিন পর টিসিএসের মতো এশিয়ার বাজারে অগ্রণী ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ব্যবসায় লোকসান হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সবচেয়ে বড় দু’টি বাজার ব্রিটেন ও আমেরিকা। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মোট ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকার রফতানির চার-পঞ্চমাংশই ব্রিটেন ও আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেই দু’টি বিদেশি বাজারেই মন্দা এসেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে, প্রতিযোগিতা এবং বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা অস্বাভাবিক দ্রুত হারে বেড়ে যাওয়ায়। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্রিটেনের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বাজার দারুণ ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। অন্য দিকে, ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বার বলেছেন, তাঁর দেশে বেকারত্বের সমস্যা মেটাতে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে কর্মরত বিদেশিদের ‘অপ্রয়োজনীয়’ মনে করতে তিনি দ্বিধা করবেন না। ফলে, মার্কিনমুলুকের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কর্মরত ভারতীয় কর্মচারীদের ভবিষ্যত রীতিমতো অন্ধকারে। মূলত ওই ভারতীয় কর্মীদের ভরসাতেই আমেরিকায় তাদের ব্যবসা চালায় ইনফোসিস, উইপ্রো, টিসিএসের মতো ভারতের অগ্রণী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি।

ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বাড়-বৃদ্ধির ওপর যারা নজর রাখে, সেই সংস্থা ‘ন্যাসকম’ গত নভেম্বরেই পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছিল একটানা বেশ কয়েক বছর ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গায়ে-গতরে বেড়ে ওঠার পর চলতি অর্থবর্ষের শেষের দিক থেকেই তা অনিবার্য অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যেতে চলেছে।

Infosys Wipro Challenging Times for Indian IT
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy